বিষয়বস্তুতে চলুন
উইকিপিডিয়া একটি মুক্ত বিশ্বকোষ

বুন্দিয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বুন্দিয়া
বুন্দিয়া
অন্যান্য নামবুরিন্দা, বোঁদে
উৎপত্তিস্থলভারতীয় উপমহাদেশ
অঞ্চল বা রাজ্যবাংলাদেশভারত
প্রধান উপকরণচাল, বেসন, ঘি, চিনি
ভিন্নতাসাদা বোঁদে
অনুরূপ খাদ্যমিহিদানা

বুন্দিয়া বা বোঁদে বা বুরিন্দা বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় মিষ্টান্ন যা বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ও ত্রিপুরায় পাওয়া যায়। বেসন তেলে ভেজে সিরায় ডুবিয়ে বুন্দিয়া তৈরি করা হয়ে থাকে।

উৎপত্তি

[সম্পাদনা ]
বাংলাদেশে তৈরিকৃত বুন্দিয়া

'বুন্দিয়া' শব্দটি সংস্কৃত শব্দ 'বিন্দুক' থেকে উদ্ভূত। বুন্দিয়া বাংলাদেশ ও ভারতের অন্যতম প্রাচীন মিষ্টান্ন। প্রাচীন সাহিত্যে এর উল্লেখ রয়েছে।[] সেখানে বিরিকলাই গুঁড়ো, চিনি ও ঘি সহযোগে এই মিষ্টান্ন প্রস্তুত করা কথা বলা হয়েছে।[]

প্রণালী

[সম্পাদনা ]

চালের গুঁড়ো ও বেসন মিশিয়ে তাতে পানি দিয়ে একটি থকথকে তরল মিশ্রণ প্রস্তুত করা হয়। একটি ছিদ্রযুক্ত ছানতার মধ্য দিয়ে বিন্দু বিন্দু তরল মিশ্রণ কড়াইয়ে ফুটন্ত তেল/ঘিয়ে ছাড়া হয়। তেল/ঘিয়ে কড়া করে ভেজে গোলকৃতি দানাগুলি সামান্য চিনির রসে ডুবিয়ে রাখা হয়। এভাবেই তৈরি হয় বুন্দিয়া।[]

প্রকারভেদ

[সম্পাদনা ]

বুন্দিয়া সাধারণত লালচে রঙের হয়। তেল বা ঘিয়ে ভাজা বুন্দিয়া জাফরান মেশানো (বাধ্যতামূলক নয়) চিনির রসে ডোবালে লালচে হয়। প্রচলিত লালচে বুন্দিয়ার একটি প্রকারভেদ হল সাদা বুন্দিয়া। বাংলাদেশে হলদে এবং লালচে মিশ্রণের বুন্দিয়া বেশি প্রচলিত। মোটামুটি পুরো দেশেই এটি পাওয়া যায়। সারাবছর চাহিদা ও প্রস্তুতি কম থাকলেও রমজান মাসে ইফতার খাদ্য তালিকায় এটি বহুল জনপ্রিয়। পশ্চিমবঙ্গে সাদা বুন্দিয়া কিছু বিশেষ অঞ্চলেই প্রসিদ্ধ এবং উপলব্ধ। তার মধ্যে হুগলি জেলার জনাই ও কামারপুকুর-জয়রামবাটী অন্যতম। জনাইয়ের বড়ো বোঁদে পটলাকৃতি, কামারপুকুর-জয়রামবাটীর সাদা বোঁদে গোলাকৃতি।[] জয়রামবাটীর সাদা বুন্দিয়ার মূল উপাদান বরবটি দানার গুঁড়ো বা বরবটি বেসন, আতপ চাল ও গাওয়া ঘি।[] বরবটি বেসন ও আতপ চালের গুঁড়ো ১:২ অনুপাতে মিশিয়ে সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হয়। পরের দিন সেই মিশ্রণ কে ছানতার ছিদ্রের মধ্যে দিয়ে কড়াইয়ে ফুটন্ত গাওয়া ঘিতে ফেলা হয়। ভাজা হলে চিনির রসে ডুবিয়ে রাখা হয়। ভারতে একে সাদা বোঁদে হিসেবে ডাকা হয়।[]

জনপ্রিয়তা

[সম্পাদনা ]

কথিত আছে যে রামকৃষ্ণ পরমহংস সাদা বোঁদে খেতে অত্যন্ত ভালবাসতেন।[] জয়রামবাটীর সাদা বোঁদে ভক্ত ও ভ্রমণার্থীদের মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয়।[] রজনীকান্ত সেন ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত কল্যাণী কাব্যগ্রন্থের ঔদারিক গানে বাংলার বিভিন্ন প্রকার মিষ্টান্নের উল্লেখ করেছেন। ঔদারিক গানে বুঁদিয়া বা বোঁদের উল্লেখ পাওয়া যায়-

" যদি, কুমড়োর মত, চালে ধ’রে র’ত,

পান্‌‌তোয়া শত শত;
আর, সরষের মত, হ’ত মিহিদানা
বুঁদিয়া বুটের মতো!

"

আরও দেখুন

[সম্পাদনা ]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা ]
  1. বন্দ্যোপাধ্যায়, সুমিত্র (২০ অক্টোবর ২০১৩)। "মধুর রসের বশে"এই সময়। কলকাতা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৪ 
  2. ক্রন্ডল, মাইকেল (২০১১)। Sweet Invention: A History of Dessert (ইংরাজি ভাষায়)। শিকাগো: শিকাগো রিভিউ প্রেস। পৃষ্ঠা ১৭। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৪ উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)
  3. কুন্ডু, অশোককুমার (২৬ ডিসেম্বর ২০১১)। "সাদা বোঁদেতেই খ্যাতি ভোলানাথের"আনন্দবাজার পত্রিকা। কলকাতা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৪ 
অদুগ্ধভিত্তিক
শর্করাভিত্তিক
শস্যভিত্তিক
গজা ও জিলিপি গোত্রীয়
বোঁদে ও লাড্ডু গোত্রীয়
নাড়ু ও মোয়া গোত্রীয়
পিঠে গোত্রীয়
অন্যান্য
ফলভিত্তিক
দুগ্ধভিত্তিক
ছানাভিত্তিক
রসগোল্লাগোত্রীয়
পান্তুয়াগোত্রীয়
সন্দেশগোত্রীয়
অন্যান্য
ক্ষীরভিত্তিক
সরভিত্তিক
মিশ্র
দইভিত্তিক
প্রধান খবার পদ
জলখাবার
রুটি
পানীয়
মিষ্টান্ন
প্রবাসী বাংলাদেশী

AltStyle によって変換されたページ (->オリジナル) /