সূরা হুজুরাত
- Afrikaans
- العربية
- مصرى
- Azərbaycanca
- تۆرکجه
- Башҡортса
- Bosanski
- کوردی
- Dagbanli
- Deutsch
- English
- فارسی
- Suomi
- Français
- עברית
- हिन्दी
- Bahasa Indonesia
- Italiano
- 日本語
- Jawa
- Қазақша
- 한국어
- Kurdî
- മലയാളം
- Bahasa Melayu
- مازِرونی
- Nederlands
- پښتو
- Português
- Русский
- Slovenščina
- Shqip
- Sunda
- Svenska
- Тоҷикӣ
- Türkmençe
- Tagalog
- Türkçe
- Українська
- اردو
- Oʻzbekcha / ўзбекча
- 中文
- 閩南語 / Bân-lâm-gú
- 粵語
শ্রেণী | মাদানী সূরা |
---|---|
নামের অর্থ | বাসগৃহ |
পরিসংখ্যান | |
সূরার ক্রম | ৪৯ |
আয়াতের সংখ্যা | ১৮ |
পারার ক্রম | ২৬ |
রুকুর সংখ্যা | ২ |
← পূর্ববর্তী সূরা | সূরা ফাতহ |
পরবর্তী সূরা → | সূরা ক্বাফ |
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ |
কুরআন |
---|
ধারাবাহিক নিবন্ধশ্রেণীর অংশ |
কোরআন ক্যালিগ্রাফি |
কুরআনের বিষয়বস্তু |
কুরআন পড়ার নিয়ম |
অনুবাদ |
সূরা আল হুজুরাত (আরবি ভাষায়: الحجرات) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৪৯ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ১৮ এবং এর রূকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২। সূরা আল হুজুরাত মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে।
নামকরণ
[সম্পাদনা ]এই সূরাটির চতুর্থ আয়াতের إِنَّ الَّذِينَ يُنَادُونَكَ مِنْ وَرَاءِ الْحُجُرَاتِ বাক্যাংশ থেকে الْحُجُرَاتِ অংশটি অনুসারে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরার মধ্যে الحجرات (‘হুজুরাত’) শব্দটি আছে এটি সেই সূরা।[১]
নাযিল হওয়ার সময় ও স্থান
[সম্পাদনা ]এ সূরা বিভিন্ন পরিবেশ ও ক্ষেত্রে নাযিল হওয়া হুকুম-আহকাম ও নির্দেশনাসমূহের সমষ্টি; বিষয়বস্তুর সাদৃশ্যের কারণে এগুলোকে এখানে একত্রিত করা হয়েছে। এসব হুকুম -আহকামের বেশীর ভাগই মাদানী যুগের শেষ পর্যায়ে নাযিল হয়েছে। যেমনঃ ৪র্থ আয়াত সম্পর্কে তাফসীরকারকদের বর্ণনা হচ্ছে আয়াতটি বনী তামীম গোত্র সম্পর্কে নাযিল হয়েছিলো যার প্রতিনিধি দল এসে নবীর স্ত্রীগণের গৃহের বাইরে থেকে তাকে ডাকাডাকি শুরু করেছিলো। সমস্ত সীরাত গ্রন্থে হিজরী ৯ম সনকে এ প্রতিনিধি দলের আগমনের সময় বলে বর্ণনা করা হয়েছে। অনুরূপভাবে, ৬ষ্ঠ আয়াত সম্পর্কে বহু সংখ্যক হাদীসের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, তা ওয়ালী ইবনে উকবা সম্পর্কে নাযিল হয়েছিলো যাকে নবী মুস্তালিক গোত্র থেকে যাকাত আদায় করে আনতে পাঠিয়েছিলেন।
বিষয়বস্তুর বিবরণ
[সম্পাদনা ]এ সুরার বিষয়বস্তু হলো মুসলমানদেরকে এমন আদব-কায়দা, শিষ্টাচার ও আচরণ শিক্ষা দেওয়া যা তাদের ঈমানসুলভ স্বভাব-চরিত্র ও ভাবমূর্তির উপযুক্ত ও মানানসই।
প্রথম ৫ আয়াতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে আদব কায়দা শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এরপর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, প্রতিটি খবরকেই বিশ্বাস করা এবং সে অনুযায়ী তড়িৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ঠিক নয়।
মুসলমানদের দু’টি দল যদি কোন সময়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, সে ক্ষেত্রে অন্য মুসলমানদের কর্মনীতি কী হবে তা।
মুসলমানদেরকে কিছু খারাপ বিষয় থেকে আত্মরক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়েছে- একে অপরকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা উপহাস করা উপনাম বা খারাপ নামে ডাকা গোপন বিষয়ে খোঁজাখুজি বা অনুসন্ধান করা প্রভৃতি।
সবশেষে বলা হয়েছে- ঈমানের মৌখিক দাবী প্রকৃত জিনিস নয় বরং সরল মনে আল্লাহ ও রাসূলকে মানা, কার্যত অনুগত থাকা এবং কুরবানী করা।
আলোচ্য বিষয়ঃ
১ম আলোচ্য বিষয়ঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের চেয়ে অগ্রগামী না হওয়া। এটা ঈমানের প্রাথমিক ও মৌলিক দাবী। অর্থ্যাৎ,
কোন ঈমানদার নিজের মতামত ও ধ্যান-ধারণাকে আল্লাহ ও রাসূলের সিদ্ধান্তের চেয়ে অগ্রাধিকার দিতে পারে না এবং মতামত পোষন করতে পারে না। সুরা আহযাবের ৩৬ নং আয়াতে এরূপ নির্দেশ রয়েছে যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যে বিষয়ে ফয়সালা করে দিয়েছেন সে বিষয়ে আলাদা কোন ফয়সালা করার এখতিয়ার কোন ঈমানদারের জন্য আর অবশিষ্ট থাকে না। এ নির্দেশটি শুধু ব্যক্তিগত নয় বরং মুসলমানদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য (সরকার, বিচারালয়, পার্লামেন্ট)। সহীহ সনদে বর্ণিত হাদীসঃ মুয়ায ইবনে জাবালকে ইয়েমেনের বিচারক করে পাঠানোর সময় নবী (স:) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কিসের ভিত্তিতে ফয়সালা করবে?’ তিনি বললেন- ‘আল্লাহর কিতাব অনুসারে।’ নবী (স:) বললেন যদি কিতাবে না পাওয়া যায়? তিনি জবাব দিলেন, আল্লাহর রাসূলের সুন্নাতের সাহায্য নেব। নবী (স:) বললেন, যদি সেখানে না পাও? তিনি জবাব দিলেন, তাহলে আমি নিজেই ইজতেহাদ করবো।’ তাই আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে আল্লাহর কিতাবই সর্বপ্রথম উৎস এবং তারপরই হাদীসের স্থান। এরপর ইজমা ও কিয়াস। এক্ষেত্রে নিজেদের একচ্ছত্র মতামতকে প্রাধান্য দিলে বোঝাপড়া হবে আল্লাহর সাথে।
২য় আলোচ্য বিষয়ঃ যারা রাসূল (স:) এর মজলিশে যাতায়াত করতো তাদেরকে এ আদব শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য- তাঁর সাথে কথা বলার সময় যেন তাঁর মর্যাদার দিকে লক্ষ্য রাখা হয়।
এক্ষেত্রে যখনই নবী (স:) এর আলোচনা করা হয় এবং তাঁর হাদীস বর্ণনা করা হয় সর্বাবস্থায় তাঁর প্রতি শিষ্টতা বজায় রাখা দরকার। নিজের চাইতে উচ্চ মর্যাদার লোকদের সাথে কথা বলার শিষ্টতা এখানে শিক্ষা দেয়া হয়েছে। ইসলামে রাসূলের (স:) ব্যক্তিসত্ত্বার মর্যাদা এ আয়াত থেকে বুঝা যায়। রাসূলের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে সামান্য শিথিলতায় সারা জীবনের সঞ্চিত পুঁজি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। নবীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা না করা মূলত আল্লাহর প্রতি করা না করার পর্যায়ভুক্ত।
৩য় আলোচ্য বিষয়ঃ অর্থ্যাৎ যে হৃদয়ে রাসূলের (স:) মর্যাদা নেই সে হৃদয়ে তাকওয়া থাকতে পারে না। যারা বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তারা রাসূলের প্রতি তাদের পক্ষ থেকে যথাযথ মর্যাদা প্রদর্শন করে।
৪র্থ আলোচ্য বিষয়ঃ বেদুইন আরবের সে পরিবেশে যেখানে সাধারণভাবে মানুষ কোন প্রকার শিষ্টাচারের শিক্ষা পায়নি তাদের অনেকেই সময়ে অসময়ে রাসূলের (স:) সাথে সাক্ষাতের জন্য হাজির হতো। তাঁর হুজরার চারদিকে ঘুরে ঘুরে বাইরে থেকেই তাঁকে ডাকতো। স্বভাবগত কারণেই রাসূল (স:) এসব সহ্য করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করলেন। অর্থ্যাৎ চিৎকার না করে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করলে রাসূল (স:) নিজেই এসে তাদের সাথে সাক্ষাত করতেন। এ আয়াতে এসব ভুলের পুনরাবৃত্তি না করার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে।
৫ম আলোচ্য বিষয়ঃ কোন সংবাদ শুনার সাথে সাথে যাচাই না করে বিশ্বাস করতে নিষেধ করা হয়েছে। অধিকাংশ মুফাস্সিরের মতে এটি ওলীদ ইবনে ওকবা ইবনে আবা মুআ’ইত সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। বনু মুসতালিক গোত্র সম্পর্কে ওয়ালীদ ইবনে উকবার খবরের ভিত্তিতে নবী (স:) তাদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দ্বিধান্বিত ছিলেন। কিন্তু কিছু সাহাবী তৎক্ষনাৎ তাদের বিরুদ্ধে আক্রমন করার জন্য নবী (সা:) কে পীড়াপীড়ি করছিল। এ প্রেক্ষিতে এই আয়াত।
হযরত উম্মে সালামা বর্ণিত হাদীসে পুরো ঘটনাটি এভাবে বর্ণিত হয়েছে। ইসলামের নাজুক পরিস্থিতিতে যখন একটি ভিত্তিহীন সংবাদকে কেন্দ্র করে এত বড় ভুল সংঘটিত হতে যাচ্ছিল সে মুহুর্তে আল্লাহ এ মৌলিক নির্দেশ দিলেন যে, যখন এমন কোন খবর পাওয়া যাবে যার ভিত্তিতে বড় রকমের কোন ঘটনা সংঘটিত হতে পারে তখন তা বিশ্বাস করার পূর্বে বার্তাবাহক কেমন ব্যক্তি তা যাচাই করতে হবে।
যার বাহ্যিক অবস্থা দেখেই প্রতীয়মান হয় যে, বার্তাবাহক নির্ভরযোগ্য নয় (ফাসেক) তবে প্রাপ্ত সংবাদ অনুযায়ী কাজ করার পূর্বে তা যাচাই করা দরকার। যার চরিত্র ও কর্ম নির্ভরযোগ্য নয় এমন কোন সংবাদদাতার সংবাদের উপর ভিত্তি করে কোন, ব্যক্তি, জাতি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা ইসলামী সরকারের জন্য বৈধ নয়। হাদীস শাস্ত্রবিদগণ এ প্রেক্ষিতে ‘জারহ ও তা’দীল’ এর নীতি উদ্ভাবন করেছেন-যাদের মাধ্যমে নবী (সা:) এর হাদীস পরবর্তী বংশধরদের নিকট পৌঁছেছিল তাদের অবস্থা যাচাই করা যায়। তাছাড়া সাক্ষ্য আইনের ক্ষেত্রে নীতি হলো এমন কোন ব্যাপারে ফাসেক ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না যা দ্বারা শরীয়তের কোন নির্দেশ প্রমাণিত হয় কিংবা কোন মানুষের উপর কোন অধিকার বর্তায়। তবে সাধারণ পার্থিব ব্যাপারে প্রতিটি খবর অনুসন্ধান এবং সংবাদদাতার নির্ভরযোগ্যতা জরুরী নয়। কারণ, আয়াতে গুরুত্বপূর্ণ খবর বলা হয়েছে।
৬ষ্ঠ আলোচ্য বিষয়ঃ অর্থ্যাৎ কতিপয় লোক তাদের অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত জানালেও মুসলমানদের গোটা জামায়াত ভুল করেনি। মুমিনদের সঠিক পথের উপর কায়েম থাকার কারণ হচ্ছে আল্লাহ তার দয়া ও মেহেরবানীতে ঈমানী আচরণকে তাদের জন্য প্রিয় ও হৃদয়গ্রাহী করে দিয়েছেন এবং নাফরমানী আচরণকে ঘৃনিত করে দিয়েছেন। আয়াতের দু’টি অংশে দু’টি ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছেঃ
যারা বনু মুসতালিকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য পীড়াপীড়া করছিল তাদের কথা বলা হয়েছে। কথা বলা হয়েছে যারা নিজেদের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার ব্যাপারে পীড়াপীড়ি করেনি। বরং ঈমানের দাবীর উপর অটল ছিলেন। তবে তারা ঈমানের প্রতি অটল ছিল না একথা বলা হয়নি, বরং শিথিলতার কথা বলা হয়েছে। তাই আল্লাহ প্রথমে এর ভুল ও কুফল তুলে ধরেছেন।
৭ম আলোচ্য বিষয়ঃ আল্লাহর অনুগ্রহ ও মেহেরবানী কোন ভাগ বাটোয়ারার বিষয় নয়। আল্লাহ তা যাকে ইচ্ছা তাকে দান করেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা ]- ↑ "সূরার নামকরণ"। www.banglatafheem.com। তাফহীমুল কোরআন, ২০ অক্টোবর ২০১০। ১২ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৫।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা ]- ডিজিটাল 'আল কোরআন' - ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ
হুজরাত
[[হুজরাতের শিক্ষা: ১. উপহাস করো না। [আয়াত-১১]
২. দোষারোপ করো না।[আয়াত-১১]
৩. নাম বিকৃত করো না, মন্দ নামে ডেকো না। [আয়াত-১১]
৪. পশ্চাতে নিন্দা করো না। [আয়াত-১২]
৫. মন্দ ধারণা থেকে বিরত থাকো। [আয়াত-১২]
৬. ছিদ্রান্বেষন করো না। [আয়াত-১২]
৭. ফাসিকের সংবাদ যাচাই ব্যতিরেকে বিশ্বাস করো না। [আয়াত-৬]
৮. বিবাদমান দুটি পক্ষের ঝামেলা ন্যায়পন্থায় মীমাংসা করবে। [আয়াত-৯]
৯.সর্বাবস্থায় ইনসাফ করবে। [আয়াত-৯]
১০. মর্যাদার মূল মাপকাঠি ‘তাকওয়া’। [আয়াত ১৩]
]]