প্রতিবেদন
- العربية
- Azərbaycanca
- Български
- Català
- Čeština
- Чӑвашла
- Deutsch
- Ελληνικά
- English
- Esperanto
- Español
- Eesti
- Euskara
- فارسی
- Suomi
- Frysk
- Gaeilge
- עברית
- हिन्दी
- Bahasa Indonesia
- Italiano
- ಕನ್ನಡ
- 한국어
- Кыргызча
- Latviešu
- Bahasa Melayu
- Nederlands
- Norsk nynorsk
- Norsk bokmål
- Português
- Русский
- Simple English
- Slovenčina
- Slovenščina
- Sunda
- Türkçe
- Українська
- Tiếng Việt
- 中文
প্রতিবেদন হলো এক প্রকার নথি, যা একটি নির্দিষ্ট শ্রোতা ও উদ্দেশ্যের জন্য একটি সংগঠিত বিন্যাসে তথ্য উপস্থাপন করে। যদিও প্রতিবেদনের সারাংশ মৌখিকভাবে প্রদান করা যেতে পারে, তবে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন প্রায়শই লিখিত নথির আকারে প্রকাশ করা হয়।[১] [২]
ব্যুৎপত্তি ও সংজ্ঞা
[সম্পাদনা ]‘প্রতিবেদন’ শব্দটি ইংরেজি "Report" শব্দের বাংলা পরিভাষা। "Report" শব্দটির বাংলা আভিধানিক অর্থ হলো – সমাচার, বিবরণী বা বিবৃতি। কোনো ঘটনা সম্পর্কিত তথ্যভিত্তিক বর্ণনাত্মক বিবরণকে একটি প্রতিবেদন বলে। তবে কখনো কখনো কোনো সুনির্দিষ্ট ঘটনা বা বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কোনো ব্যক্তি বা তদন্ত কমিশন কোনো খুঁটিনাটি অনুসন্ধানের পর সুপারিশসহ যে বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রদান করে, তাও এক ধরনের প্রতিবেদন। এই ধরনের প্রতিবেদনকে "তদন্ত প্রতিবেদন" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
প্রকারভেদ
[সম্পাদনা ]প্রতিবেদন দুই ধরনের হয় –
১. সংবাদ প্রতিবেদন
২. প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
- সংবাদ প্রতিবেদন: সংবাদপত্রে প্রকাশের উদ্দেশ্যে লিখিত প্রতিবেদনকে সংবাদ প্রতিবেদন বলে। নিজস্ব সংবাদদাতা ও প্রতিবেদক এবং বিভিন্ন দেশী ও বিদেশী সংবাদ সংস্থার মাধ্যমে এসব সংবাদ প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হয়।
- প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন: কোনো প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো, কার্যাবলি, ঘটনা বা অবস্থা যাচাই করে সে সম্পর্কিত তথ্য, তত্ত্ব, উপাত্ত তুলে ধরে যে বিবরণী প্রণয়ন করা হয়, তাকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বলে। এই ধরনের প্রতিবেদন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে লেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, কোনো প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক ভ্রমণ অথবা গ্রন্থাগার সম্পর্কে প্রতিবেদন, কোনো পরীক্ষাকেন্দ্রে গোলযোগ সম্পর্কিত প্রতিবেদন, কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের ওপর ষান্মাসিক, বার্ষিক কিংবা দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদন, কোথাও সংঘটিত দুর্ঘটনা, চুরি, ডাকাতি কিংবা লুটপাট সংক্রান্ত প্রতিবেদন।
বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা ]একটি আদর্শ প্রতিবেদন উক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ ধারণ করে –
- পরিকল্পিত রূপরেখা: আঙ্গিক বা গঠনকাঠামোর দিক থেকে প্রতিবেদনের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একটি আদর্শ প্রতিবেদন তৈরির সময় একটি রূপরেখা তৈরি করে নেওয়া হয়, না হলে উক্ত প্রতিবেদনের সৌন্দর্য ও মানসম্মতায় ঘাটতি দেখা যায়।
- যথাযথ ও সংহত ভাষা: প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তুর বাইরে বাড়তি, অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক তথ্য যোগ করা হয় না।
- বস্তুনিষ্ঠ: আদর্শ প্রতিবেদনকে বস্তুনিষ্ঠ হতে হয়। অর্থাৎ কার্যকর প্রতিবেদনে অভিরঞ্জন বা অতিশয়োক্তি যেমন থাকতে পারবে না, তেমনি তা কোনোভাবেই পক্ষপাতমূলক হওয়া যাবে না। শুধুমাত্র প্রকৃত ঘটনা ও তথ্যই যথাসম্ভব নিরাবেগ ভাষায় স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা হয়।
- সহজবোধ্য: সাধারণত প্রতিবেদনের ভাষা সহজ, সরল ও স্পষ্ট হয়। প্রতিবেদনে প্রতিটি অনুচ্ছেদ প্রাসঙ্গিক বাক্য দ্বারা আরম্ভ করা হয় এবং প্রতিটি অনুচ্ছেদে আলাদা আলাদা বিষয় সুসংহভাবে পরিবেশিত হয়।
- সংগতিপূর্ণ উদ্দেশ্য: যেহেতু প্রত্যেকটি প্রতিবেদনের সুনির্দিষ্ট একটি উদ্দেশ্য থাকে, তাই প্রতিবেদনগুলোকে এমনভাবে লিখা হয়, যেন তা মূল বা সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত না হয়।
প্রতিবেদক
[সম্পাদনা ]প্রতিবেদনের লেখককে প্রতিবেদক বলা হয়। যে কেউ যেকোনো প্রকার প্রতিবেদন লিখলে সে একজন প্রতিবেদক হিসাবে গণ্য হয়। তবে পেশাদার প্রতিবেদকরা শুধু সংবাদপত্র বা ওয়েবসাইটেই প্রতিবেদন লিখে থাকেন।
প্রতিবেদকের দায়িত্ব
[সম্পাদনা ]প্রতিবেদন তৈরি করার ক্ষেত্রে একজন প্রতিবেদক প্রাথমিকভাবে তিনটি কাজ করেন — পর্যবেক্ষণ লিপিবদ্ধ, শ্রুতিবদ্ধ বা দৃশ্যবদ্ধকরণ ও প্রতিবেদন প্রণয়ন। একজন প্রতিবেদককে প্রত্যক্ষ ঘটনার সাক্ষী হতে হয়। অথবা কোনো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সে সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। অনেক সময় প্রতিবেদন রচনার ক্ষেত্রে হয়তো অতীতে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার সঙ্গে তাকে যোগসূত্র রচনাও করতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেদক ইতিহাস লেখকের ভূমিকা পালন করেন।
প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিবেদককে সাধারণত ৬টি 'ডব্লিউ-এইচ' (Wh), যথা- Who, What, When, Where, Why ও How দ্বারা প্রশ্নের মাধ্যমে বিষয়ের স্পষ্টতা আনতে হয়। উপযুক্ত পর্যবেক্ষণ, যথাযথ পর্যালোচনা, প্রয়োজনীয় বিচার-বিশ্লেষণ ও যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে প্রতিবেদন লিখতে হয়। একটি আদর্শ প্রতিবেদন দুই থেকে তিন পৃষ্ঠার মধ্যে শেষ করা হয়। এছাড়াও ঘটনাকে আরও সহজ ও সাবলিলভাবে উপস্থাপনের জন্য প্রতিবেদনে চিত্র, নকশা, সারণি সংবলিত বাঁধাই করে খাতার আকারেও প্রকাশ করা হয়।
প্রস্তুত প্রক্রিয়া
[সম্পাদনা ]একটি সাধারণ প্রতিবেদনে নিম্নলিখিত বিভাগগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়:
- নামপত্র
- নির্বাহী সারসংক্ষেপ
- সূচিপত্র
- ভূমিকাংশ
- মূল আলোচনা
- উপসংহার
- সুপারিশ
- পরিচিতির তালিকা
- পরিশিষ্ট
সংবাদ প্রতিবেদন
[সম্পাদনা ]- শিরোনাম হতে হয় প্রাসঙ্গিক। শিরোনামটি এমন হতে হয় যেন পাঠক এই সংবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয় বা সহজে এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারে।
- বর্ণনা আকর্ষণীয় হতে হয়। বর্ণনা বেশি হলে পাঠক বিরক্ত হতে পারে। সংবাদ প্রতিবেদন তৈরির সময় কোন শ্রেণির পাঠকের জন্য লেখা হচ্ছে তা প্রতিবেদককে খেয়ালে রাখতে হয়। পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী বর্ণনা সংক্ষিপ্ত বা বিস্তৃত হতে পারে।
- সংবাদ প্রতিবেদনে নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রের কথা উল্লেখ করতে হয়। যার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, যদি তিনি তাঁর নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক থাকেন, সেক্ষেত্রে লেখা হয় ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্রে জানা গেছে’।
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
[সম্পাদনা ]- স্থান-কাল-পাত্র: প্রতিবেদন শুরু হয় স্থান-কাল-পাত্রের বর্ণনা দিয়ে। মূলকথা বা সারাংশ লেখা হয় ভূমিকা হিসেবে।
- একটি প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনে সাধারণত কয়েকটি অংশ থাকে। এগুলো ধারাবাহিকতা রক্ষা করে লেখা হয়। সূচনাংশে থাকে কর্তৃপক্ষের নিকট পত্র। এরপর মূল প্রতিবেদন হয়। সর্বশেষে থাকে প্রতিবেদন রচনা সংক্রান্ত তথ্য।
- প্রতিবেদন রচনা সংক্রান্ত তথ্যে প্রতিবেদকের নাম, ঠিকানা ছাড়াও প্রতিবেদন রচনার সময়, তারিখ ইত্যাদি যোগ করা হয়।
- বিধিসম্মত উপায়ে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন খামে ভরে উপস্থাপন করা হয়।
- মূল ঘটনা বর্ণনার সময় কোন উৎস থেকে তথ্য পাওয়া গেছে তা উল্লেখ করা হয়।
- উৎস উল্লেখ্য করার পর বিশেষজ্ঞের নাম-পরিচয়সহ তাঁর মতামত বা মন্তব্য থাকে।
- সর্বশেষে বিষয় পর্যালোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা সিদ্ধান্তমূলক মন্তব্য থাকে।
বিভিন্ন প্রকার প্রতিবেদন
[সম্পাদনা ]- বার্ষিক প্রতিবেদন
- হিসাব পরীক্ষকের প্রতিবেদন
- বইয়ের প্রতিবেদন
- আবদ্ধ প্রতিবেদন
- দোকানের প্রতিবেদন
- জনশুমারি প্রতিবেদন
- ঋণের প্রতিবেদন
- জনসংখ্যাতত্ত্বের প্রতিবেদন
- খরচের প্রতিবেদন
- অভিজ্ঞতার প্রতিবেদন
- পরিদর্শনের প্রতিবেদন
- সামরিক প্রতিবেদন
- পুলিশ প্রতিবেদন
- নীতিমালার প্রতিবেদন
- অনানুষ্ঠানিক প্রতিবেদন
- অগ্রগতির প্রতিবেদন
- তদন্ত প্রতিবেদন
- প্রযুক্তিগত বা বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন
- ভ্রমণের প্রতিবেদন
- শ্বেতপত্র
- মূল্যায়ন প্রতিবেদন
- কর্মস্থলের প্রতিবেদন[৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা ]- ↑ মদান, পূণম (২০১৬–২০১৭)। ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিশিয়েন্সি ইন ইংলিশ (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮/১১৫, জ্যোতি ব্লক, সঞ্জয় প্লেস, আগ্রা-২: আগারওয়াল পাবলিকেশন। পৃষ্ঠা ১৩৮। আইএসবিএন 9789385872280। উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
- ↑ "Definition of REPORT" [প্রতিবেদনের সংজ্ঞা]। www.merriam-webster.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২২। উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
- ↑ "QUT cite|write - Writing a report"। www.citewrite.qut.edu.au (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১০-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৬। উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
- ↑ "Report" [প্রতিবেদন]। archive.org (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৩-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)