বিষয়বস্তুতে চলুন
উইকিপিডিয়া একটি মুক্ত বিশ্বকোষ

তাবেয়ী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুহাম্মাদ
বিষয়ের ধারাবাহিকের একটি অংশ
মুহাম্মাদ
পেশাজীবন
ইসলাম
বিষয়ক ধারাবাহিক নিবন্ধের অংশ

তাবি‘ঈ (আরবী تابعى) শব্দটি ইসলামী পরিভাষার ব্যবহৃত আরবী শব্দ। তাবি‘ঈন দ্বারা রাসূল (صلى الله عليه وسلم)-এর সঙ্গী অর্থাৎ সাহাবাহ্দের সাথে দেখা পাওয়া ঈমানদার ব্যক্তিদের বুঝানো হয়। তাবি‘ঈনদের মধ্যে অনেক জ্ঞানী ব্যক্তি রয়েছেন যারা ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘটিয়েছেন ।

সংজ্ঞা

[সম্পাদনা ]

তাবি'ঈ ঐ ব্যক্তিকে বলা যাবে যিনি ঈমান গ্রহণ অবস্থায় কোন ছাহাবী (رضي الله عنه) কে দেখেছেন,তার সাথে কথা বলেছেন বা তার থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন এবং ঈমান অবস্থায় মৃত্যু বরন করেছেন ।

যারা সাহাবীদের পরের প্রজন্মের ব্যক্তি তাদেরকে তাবি‘ঈ বলা হয়েছে। তারা মুহাম্মাদ (صلى الله عليه وسلم)-এর পরবর্তী বা সমসাময়ীক যুগের লোক ছিলেন তবে তাঁর সাথে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ছিলেন না বরং কোন সাহাবীর সাথে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ছিলেন,জানতেন। আর যারা তাবি‘ঈনদের কারো সাথে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ছিলেন, জানতেন তারাই হলেন তাবি‘ঊ আত-তাবি‘ঈন বা দ্বিতীয় পর্যায়ের লোক।[]

হাদীসশাস্ত্রে কোন হাদীসের মূল বর্ননাকারী প্রাথমিক যুগের সাহাবী, না একজন গন্যমান্য প্রসিদ্ধ তাবি‘ঈ তার উপর'ই হাদীসটির গুরুত্ব নির্ভর করে। একারণেই প্রশিদ্ধ (মাশ্‌হূর) শ্রেণীর হাদীস বলতে বোঝায় সেই হাদীস, যা সূত্র সনদ পরম্পরায় প্রাথমিক যুগের একজন তাবি‘ঈ পর্যন্ত গিয়েছে দ্বিতীয় যুগের কয়েকজন তাবি‘ঈ এবং তাহাদের পরবর্তীগণ কর্তৃক বর্ণিত ও হস্তান্তরিত হয়েছে।

কুর’আন পাঠ সম্পর্কিত বা অন্যান্য ধর্মীয় বিষয়ক হাদীসসমূহের জন্যও বর্ণনাকারী পরম্পরা রয়েছে। হাসান আল-বাসরী ছিলেন প্রাথমিক যুগের একজন বিখ্যাত তাবি‘ঈ।

ইসলামের বিভিন্ন মনীষী তাবি‘ঈনের সংজ্ঞা এভাবে উপস্থাপন করেছেনঃ

১। উলূমুল হাদীস এর পরিভাষায়- তাবি‘ঈ হচ্ছেন: যিনি সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়েছেন তিনি তাবি‘ঈ। বিশুদ্ধ মতানুযায়ী, এর জন্য দীর্ঘদিনের সঙ্গ শর্ত নয়। অতএব, যিনি সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়েছেন এবং ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনিই তাবি‘ঈ। তাবি‘ঈর মধ্যে উত্তমতার স্তরভেদ রয়েছে।

২। হাফিয বিন হাজার ‘নুখবাতুল ফিকার’ (৪/৭২৪) গ্রন্থে বলেন: তাবি‘ঈ হচ্ছেন- যিনি সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়েছেন।

৩। ইব্‌ন কাসীর বলেন: খতিব আল-বাগদাদী বলেন: তাবি‘ঈ হচ্ছেন যিনি রাসূল নবুয়তের পরে জন্ম গ্রহণ করেছেন এবং তার সাহাবীর দেখা পেয়েছেন ।

৪। হাকেমের বক্তব্যের দাবী হচ্ছে- যিনি সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়েছেন তাকে তাবি‘ঈ বলা যাবে। সাহাবীর থেকে শিক্ষা লাভ না করে থাকে ।

তাবি‘ঈনদের মর্যাদা

[সম্পাদনা ]

তাবি‘ঈনদের সম্মান ও মর্যাদা সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীস পাওয়া যায় । []

১। ইমাম আল-বুখারী (৩৬৫১) ও ইমাম মুসলিম (২৫৩৩) হতে বর্ণিত, ইব্‌ন মাস্‘ঊদ থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী صلى الله عليه وسلم বলেন: "সর্বোত্তম মানুষ হচ্ছে- আমার প্রজন্ম। এরপর যারা আসবে তাঁরা । এরপর যারা আসবে তাঁরা । অতঃপর এমন কওম আসবে যাদের সাক্ষ্য হলফের পিছনে, হলফ সাক্ষ্যের পিছনে ছুটাছুটি করবে।"

২। সহিহ বুখারির ৩৩৯৯ নং হাদিসে বর্নিত রয়েছেঃ

عن أبي سعيد رضي اللّٰه عنه،عن النبيّ صلى اللّٰه عليه وسلم،قال:يأتي على الناس زمان يغزون،فيقال لهم:فيكم من صحب الرسول صلى اللّٰه عليه وسلم،فيقولون نعم،فيفتح عليهم،ثم يغزون،فيقال لهم هل فيكم من صحب من صحب الرسول صلى اللّٰه عليه وسلم؟فيقولون نعم،فيفتح لهم

হযরত আবূ সা‘ঈদ থেকে বর্ণিত,রাসূল صلى الله عليه وسلم বললেন, লোকদের নিকট এমন যুগ আসবে যে,তারা যুদ্ধ করবে,তখন তাদের বলা হবে,তোমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিও কি আছেন, যিনি রাসূল صلى الله عليه وسلم-এর সাঙ্গ পেয়েছেন? তখন তারা বলবেন হ্যাঁ। তখন (ছাহাবাহ্দের বরকতের দরুন) তাদেরকে বিজয় দেয়া হবে। তারপর তারা জিহাদ করবেন, তখন তাদের বলা হবে তোমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি কি আছেন, যিনি রাসূল صلى الله عليه وسلم-এর ছাহাবাহ্দের সহচর্য পেয়েছেন? তখন তারা বলবেন হ্যাঁ। তখন তাদেরকে বিজয় দিয়ে দেয়া হবে।

বিশিষ্ট তাবেয়ীগনের তালিকা

[সম্পাদনা ]

ইসলামের অন্ত্যন্ত মূল্যবান ব্যক্তিবর্গ হচ্ছেন তাবেয়ীগন । অনেক ইসলাম ধর্মের মনীষী রয়েছে এর মধ্যে । কিছু নাম উল্লেখ্যঃ [] []

তাবেয়ী প্রজন্ম

[সম্পাদনা ]

১। বিশুদ্ধ মতানুযায়ী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রজন্ম হচ্ছে-সাহাবায়ে কেরাম। দ্বিতীয় প্রজন্ম হচ্ছে- তাবেয়ীগণ। তৃতীয় প্রজন্ম হচ্ছে- তাবে-তাবেয়ীগণ। [ইমাম নববী রচিত সহিহ মুসলিমের ব্যাখ্যাগ্রন্থ (১৬/৮৫) থেকে সমাপ্ত]

২। হাফেয ইবনে হাজার বলেনঃ হাদিসের বাণী: "রাসুল প্রজন্মের যারা তাঁরা হচ্ছেন "সাহাবীগণ" । এদের পরে যারা তারা হচ্ছেন- "তাবেয়ীগণ" । এরপর তাদের পরে যারা তারা হচ্ছেন- "তাবে-তাবেয়ীগণ" । ফাতহুল বারী (৭/৬) থেকে সমাপ্ত।

৩ । সুয়ুতী বলেন: প্রজন্ম বিশেষ কোন সময়সীমাতে আবদ্ধ নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রজন্ম হচ্ছে- সাহাবায়ে কেরাম। নবুয়তের শুরু থেকে সর্বশেষ সাহাবীর মৃত্যু পর্যন্ত ১২০ বছর এই প্রজন্মের সময়কাল ।এরপর তাবেয়ী-প্রজন্মের সময়কাল ১০০ হিঃ থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত ।এরপর আর তাবে-তাবেয়ী প্রজন্মের সময়কাল এরপর থেকে শুরু ২২০ হিঃ পর্যন্ত। মিরকাতুল মাফাতিহ’ (৯/৩৮৭৮) গ্রন্থ থেকে সমাপ্ত।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা ]
  1. সম্পাদনা পরিষদ, ইসলামী বিশ্বকোষ (২০০৭)। সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, ১ম খন্ড। বাইতুল মোকাররম, ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ৪২৭। আইএসবিএন 984-06-0252-7 
  2. "ছাহাবী, তাবেঈ, তবে-তাবেঈ ও প্রসিদ্ধ ইমামগণ হাদীছকে যেভাবে দেখতেন"ইসলামিক অনলাইন মিডিয়া। ২০১২-০৮-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১১ 
  3. "হিজরি ১ম শতাব্দীর মুসলমান পণ্ডিতদের তালিকা"উইকিপিডিয়া। ২০১৮-১২-০৮। 
  4. "তাবেঈ গণের নাম - Sunnipedia"www.sunnipediabd.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১১ 

AltStyle によって変換されたページ (->オリジナル) /