বিষয়বস্তুতে চলুন
উইকিপিডিয়া একটি মুক্ত বিশ্বকোষ

আল-ওয়াজির মসজিদ

আল-ওয়াজির মসজিদ
আরবি: جامع الوزير
upright=১.৪
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তি ইসলাম
ধর্মীয় অনুষ্ঠানসুন্নি ইসলাম
যাজকীয় বা
সাংগঠনিক অবস্থা
মসজিদ
অবস্থাচালু
অবস্থান
অবস্থানআর-রুসাফা, বাগদাদ, ইরাক
ইরাকের‌ বাগদাদ রাজধানীতে অবস্থিত
স্থানাঙ্ক ৩৩°২০′২১′′ উত্তর ৪৪°২৩′১৯′′ পূর্ব / ৩৩.৩৩৯২° উত্তর ৪৪.৩৮৮৫° পূর্ব / 33.3392; 44.3885
স্থাপত্য
ধরনমসজিদ
স্থাপত্য শৈলী উসমানীয় স্থাপত্য
বিনির্দেশ
ধারণক্ষমতা৪০০ জন মুসল্লি
মিনার

আল-ওয়াজির মসজিদ ইরাকের বাগদাদ শহরে অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ, যা একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী ভবন হিসাবে বিবেচিত হয়। ১৫৯৯ সালে উসমানীয় আমলে বাগদাদের উজির হাসান পাশা মসজিদটি নির্মাণ করেন। পরে মসজিদটি বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছিলো। মসজিদটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর উসমানীয় স্থাপত্য শৈলী[] এটি টাইগ্রিস নদীর তীরে সৌক আল-সারাইয়ের পিছনে আর-রুসাফা জেলায় অবস্থিত।[]

আল-ওয়াজির মসজিদটি ইরাকের বাগদাদ শহরে অবস্থিত এবং মসজিদটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের একটি অংশ।[]

ঐতিহাসিক পটভূমি

[সম্পাদনা ]

বর্তমানে মসজিদটি টাইগ্রিস নদীর তীরে সৌক আল-সারাইয়ের পিছনে আর-রুসাফা জেলায় অবস্থিত। আব্বাসীয় যুগের সময় মসজিদটির নাম ছিলো "ধু আল-মানারা মসজিদ"। ইরাকি ইতিহাসিকবিদ ইমাদ আবদ আল-সালাম রউফ তার "দ্য ব্রাইট কন্ট্রাক্ট" বইয়ে উল্লেখ করেছেন যে, সেলজুক আমির মুহাম্মদ আই তাপারের রাজত্বকালে ১১০৬ সালে নির্মিত একটি মাদ্রাসা ভবনের অবস্থান "তাতচি-বাগদাদী মাদ্রাসা" নামে পরিচিত ছিলো।[]

মসজিদটির নির্মাণ কাজ প্রথমে ১৫৯৯ সালে হাসান পাশার তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছিলো, তিনি ১৫৯৪ থেকে ১৬০৩ সালের মধ্যে উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে বাগদাদ শাসন করেন।[] মসজিদটি "আল-ওয়াজির মসজিদ" নামে পরিচিত হয়ে ওঠে যার অর্থ "গভর্নরের মসজিদ"। হাসান পাশা মসজিদের স্থাপত্যশৈলী নবায়ন করেন এবং একটি বৈজ্ঞানিক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে যুক্তিসঙ্গত ও যোগাযোগমূলক বিজ্ঞান শেখানো হয়। মসজিদে শিক্ষাদানকারী সবচেয়ে সুপরিচিত শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন শেখ তাহা আল-সানভি, তাকেও মৃত্যুর পর এ মসজিদে দাফন করা হয়।[]

মসজিদের মিনারটি আল-আসিফিয়াহ মসজিদের পাশে বাম দিকে দেখা যায়, ১৯৩০ সালে।

পরবর্তীতে ১৬০৪ সালে, দজলা নদীর তীরে মসজিদের পাশে একটি বিখ্যাত কফিহাউস নির্মিত হয়েছিল এবং এর নামকরণ করা হয় "হাসান পাশা ক্যাফে"।[] ১৬৮৬ সালে, "আহমেদ আগা" নামে একজন সেনা কর্মকর্তাকে মসজিদের পশ্চিম দিকটি পুনর্নির্মাণের আদেশ দেওয়া হয়েছিলো। তিনি একটি উঁচু গম্বুজ যুক্ত করে তা সম্প্রসারণ করেন।[] ইরাকি ইতিহাসবিদ শেরিফ ইউসুফের মতে, মসজিদটি একাধিকবার সংস্কার করা হলেও, মসজিদের মিনারটি প্রাচীনতম সংরক্ষিত অংশ হিসাবে রয়ে গেছে।[]

১৮১৬ সালে ব্রিটিশ ভ্রমণকারী ও সাংবাদিক জেমস সিল্ক বাকিংহাম বাগদাদ শহরে সফরের সময় মসজিদটি পরিদর্শন করেন এবং ১৮২৭ সালে তিনি "ট্রাভেলস ইন মেসোপটেমিয়া" তে মসজিদটিকে "সূক্ষ্ম গম্বুজ এবং উঁচু মিনার" হিসাবে উল্লেখ করেন।[]

স্থাপত্যের বর্ণনা

[সম্পাদনা ]
মিনার
ইন্টেরিয়র ডিজাইনে রয়েছে মুকারনাস

আল-ওয়াজির মসজিদটি আল-মুতানাব্বি রাস্তার নিকটে সৌক আল-সরাইয়ের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। মসজিদটিতে একটি ঐতিহ্যবাহী ইরাকি মিনার ছাড়াও চকচকে টাইলস এবং মার্বেল দিয়ে আচ্ছাদিত একটি গম্বুজ রয়েছে। ভেতরে রয়েছে কোরআনের আয়াত ও ফুলের মোটিফ দিয়ে সজ্জিত স্ট্যালাকটাইট ও মুকারনাদের সমন্বয়ে সাজানো সাজসজ্জা। মসজিদের প্রবেশদ্বারটি হলুদ ইট দ্বারা বেষ্টিত একটি কাঠের দরজা এবং নীল রঙের। মসজিদে ঢোকার পর এক হাজার বর্গমিটারের বেশি আয়তনের একটি প্রশস্ত প্রাঙ্গণ পাওয়া যায় এবং দেয়ালে মোটিফ ও লেখা দিয়ে সজ্জিত রয়েছে।[] মসজিদটিতে ৪০০ জনেরও বেশি মুসল্লির নামাজের জায়গা রয়েছে। মসজিদের বাম পাশে একটি গোল আকৃতির মিনার রয়েছে। মসজিদে সংযুক্ত বাগানটি টাইগ্রিস নদীর তীর পর্যন্ত বিস্তৃত।[]

মসজিদটি ১০০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে নির্মিত হয়েছিলো এবং এতে গ্রীষ্মকালীন সময়ে নামাজের জন্য দুটি স্থান রয়েছে, যেখানে প্রায় ৩৩০ জন মানুষের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে এবং শীতকালীন সময়ে নামাজের জন্য কক্ষ রয়েছে, যেখানে প্রায় ৫০০ জন মানুষ নামাজ পড়তে পারে। মসজিদটিকে বাগদাদের সবচেয়ে সুন্দর মসজিদগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং এটি টাইগ্রিস নদীর তীরে একটি জাহাজ ধ্বংসের পরে এটির নির্মাণ সম্পর্কে একটি লোককাহিনী তৈরি করেছিল যা এ মসজিদের অবস্থান নির্ধারণ করে।[]

চিত্রশালা

[সম্পাদনা ]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা ]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা ]
  1. "বাগদাদের টাইগ্রিস নদীর ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য রুসাফা, যা আল-মুস্তানসিরিয়া স্কুল থেকে আব্বাসীয় প্রাসাদ পর্যন্ত প্রসারিত"। ইউনেস্কো। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৮ 
  2. "আল-ওয়াজির মসজিদ"। ইরাকের মসজিদ। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৮ 
  3. আল-কিলানী, আলসায়েদ, মিয়াদ শরাফ এদ্দীন (২০১৫-০১-০১)। বাগদাদ পুরাতন বিদ্যালয় ৯৪১-১৩৩৬/১৫৩৪ হিজরি-১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দ (আরবি ভাষায়)। দার আল কুতুব আল ইলমিয়াহ, বৈজ্ঞানিক বইয়ের ঘর। আইএসবিএন 978-2-7451-8403-0 উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
  4. "বাগদাদ ক্যাফে, সাংস্কৃতিক জীবন বিনিময়, ১৯৯৯" 
  5. ইউসুফ, মহৎ (২০২০-০১-০১)। আরব স্থাপত্যের ইতিহাস ও বিকাশের ঐতিহাসিক ভূমিকা (আরবি ভাষায়)। আল মানহাল। আইএসবিএন 9796500428611 উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
  6. বাকিংহাম, জেমস সিল্ক (১৮২৭)। মেসোপটেমিয়া ভ্রমণ (ইংরেজি ভাষায়)। এইচ কলবার্ন। উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
  7. "আল-ওয়াজির মসজিদ, বাগদাদ" 

AltStyle によって変換されたページ (->オリジナル) /