শিপ্রা বসু
শিপ্রা বসু | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্মনাম | শিপ্রা বসু |
জন্ম | (১৯৪৫-১১-০৯)৯ নভেম্বর ১৯৪৫ কলকাতা, বৃটিশ ভারত বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ |
মৃত্যু | ২২ এপ্রিল ২০০৮(2008年04月22日) (বয়স ৬২) কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ |
ধরন | হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত , বাংলা সংগীত এবং নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী |
পেশা | সঙ্গীতশিল্পী |
কার্যকাল | ১৯৫৮ — ২০০৮ |
লেবেল | এইচএমভি |
শিপ্রা বসু (ইংরেজি: Sipra Bose) (৯ নভেম্বর ১৯৪৫ — ২২ এপ্রিল, ২০০৮) হিন্দুস্তানি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের খ্যাতনামা ভারতীয় বাঙালি শিল্পী। অসাধারণ কারুকার্যময় সুরেলা কণ্ঠের অধিকারী হয়ে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের পাশাপাশি ঠুমরি, গজল, দাদরা প্রভৃতি রাগাশ্রয়ী সঙ্গীতে সমান পারদর্শী ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী
[সম্পাদনা ]শিপ্রা বসুর জন্ম বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ৯ নভেম্বর এক সঙ্গীতানুরাগী পরিবারে। কৈশোরে তাঁর সঙ্গীতে হাতেখড়ি আচার্য চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে। বিরল প্রতিভার গুণে আর সঙ্গীতাচার্যের তালিমে তিনি হিন্দুস্তানি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের এবং সেই সাথে লঘু শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অসামান্য শিল্পী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পরে লক্ষৌ ঘরানায় সামিল হয়ে শিক্ষা নেন গজল রানী বেগম আখতারের কাছে প্রায় পনের বছর। এরপর বেনারস ঘরানার তালিম ন্যায়না দেবীর কাছ থেকে। শিপ্রা বসু নিজের অধ্যবসায়ে তাঁর আকর্ষণীয় কণ্ঠে, বিশুদ্ধ ও সাবলীল উর্দু উচ্চারণে আর অসামান্য গায়কীতে এক অনন্য গজল গায়িকা হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন । তবে তাঁকে হিন্দুস্তানি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের মূল তালিম দেন বিশ্ববন্দিত ও যশস্বী পণ্ডিত রবিশঙ্কর। [১] ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ হতে পণ্ডিতজির কাছে তালিম নিয়ে মাইহার ঘরানাতেও দক্ষতা অর্জন করেন। 'গুরুশিষ্য পরম্পরায়' সঙ্গীত সাধনার মধ্য দিয়ে এক কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে নিজের স্থান গড়ে তোলেন নিজের অধ্যবসায় আর দক্ষতায়। তিনি তাঁর পঁয়তাল্লিশ বছরের সঙ্গীত জীবনে দেশের বিভিন্ন স্থানে, ইয়োরোপের বহু দেশ, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা পরিভ্রমণ করেন এবং সঙ্গীত পরিবেশন করে সুনাম অর্জন করেন। এইচ এম ভি থেকে তাঁর গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়। তিনি "Rhyme Records" USA - An evening with Sipra Bose এর জন্য ২০০১ -২০০২ খ্রিস্টাব্দে ভারতের হিন্দুস্থানী উচ্চাঙ্গ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মহিলা শিল্পী হিসাবে গ্রামি অ্যাওয়ার্ড এর জন্য মনোনয়নও পেয়েছিলেন।[২] আকাশবাণী ও দূরদর্শনেও তিনি সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। ভজন, রাগপ্রধান বাংলা গান ও বৈঠকি গানে তিনি চিরস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। ছায়াছবিত নেপথ্যে কণ্ঠদান করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গানগুলি হল -
বাংলা রাগাশ্রয়ী
- 'আকাশে যার ওড়ার নেশা'
- 'বাঁশুরিয়া দূরে গিয়ে'
- 'ভালবাসা চোখে'
- 'বল কানে কানে'
- 'চুপি চুপি চলে না'
- 'ফিরে যা বনে'
- 'কেন অন্তহীন বিরহেরই সুর'
- 'কিছুতেই ঘুম আসে না'
- 'বাজে না বাঁশুরী'
- 'কেন মন হোলো'
- 'কেউ বোঝে না কেন'
- 'কোরো না ভুবন'
- 'কোয়েলিয়া গান থামা এবার'
- 'না ডেকে না বলো'
- 'তোমাকে ভালবেসে'
- 'তুমি না এলে'
- ‘যমুনা কি বলতে’
বাংলা আধুনিক গান
- 'ভালবেসে ব্যথা সইবো কেমনে'
- 'মনের দুয়ার খুলে কে'
- 'আমার কবার মরণ হবে বলো'
- 'আমার বাদল দিন'
- 'কাছে আমার মত কাউকে পেলে'
- 'আহা কে রঙ্গ করে গেলো'
- 'আহা মন কেমন করে'
- 'আমার সাদা রঙটা নাও'
- 'আমি গেরুয়া ধূলিতে'
- 'সঙ্গী যে কে মন কে আমার'
- 'ও ভ্রমরা কালো কাজল ভ্রমরা’
- 'এ ভাঙা বসন্ত বেলায়'
- 'বলোনা বলোনা সই ভুলিতে আমারে'
- 'ওগো আমার আগমনী আলো'
- 'জোনাকি চায় না জ্যোৎস্না'
- ‘রঙে রঙে কেন তুমি রাঙালে আমায়’
নজরুল গীতি
- 'এসো প্রিয় আরো কাছে'
- 'আমি নতুন করে গড়ব ঠাকুর'
- ‘সে দিন ছিল কি গোধূলি লগন’
ছায়াছবিতে
- 'আয়রে বসন্ত কিরণমাখা পাখা তুলে' - দ্বিজেন্দ্রগীতি (অসময় ছবিতে)
- 'চলেছে রেলের গাড়ি' (জয় জয়ন্তী ছবিতে)
- 'ফুলের দোলায় আজি দোলে শ্যামরাই' ( জীবন নিয়ে ছবিতে)
শিপ্রা বসুর স্বামী স্বনামধন্য তবলা-বাদক পণ্ডিত গোবিন্দ বসু তাঁকে নিরন্তর উৎসাহ আর প্রেরণা জুগিয়েছেন। যদিও তারা একত্রে কখনো মঞ্চে আসেন নি, তবুও তাদের পারস্পরিক প্রশংসা তাঁদের সফলতা এনে দিয়েছে।
জীবনাবসান
[সম্পাদনা ]শিপ্রা বসু ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ২২ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় পরলোক গমন করেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা ]- ↑ "শিপ্রা বসুকে উচ্চাঙ্গ মূল তালিম ও পৃষ্ঠপোষকতা দেন পণ্ডিত রবিশংকর" । সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১০।
- ↑ "Music Parampara"। ১০ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১১।