গুয়ানতানামো কারাগার
- العربية
- Azərbaycanca
- Беларуская
- Български
- Català
- کوردی
- Cymraeg
- Dansk
- Deutsch
- English
- Esperanto
- Español
- Eesti
- فارسی
- Suomi
- Føroyskt
- Français
- Galego
- עברית
- Հայերեն
- Bahasa Indonesia
- Íslenska
- Italiano
- 日本語
- Қазақша
- 한국어
- Lietuvių
- Latviešu
- മലയാളം
- Bahasa Melayu
- مازِرونی
- Nederlands
- Norsk nynorsk
- Norsk bokmål
- Occitan
- Polski
- پنجابی
- Português
- Română
- Русский
- Ikinyarwanda
- සිංහල
- Simple English
- Soomaaliga
- Svenska
- தமிழ்
- Türkçe
- Українська
- اردو
- Oʻzbekcha / ўзбекча
- Tiếng Việt
- 吴语
- 中文
- 粵語
গুয়ানতানামো কারাগার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারাগার যা বন্দীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত। এই কারাগারে বন্দীদের বিনাবিচারে আটক রাখা হয় এবং তথ্য আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে বন্দীদের ওপর যৌন অত্যাচার, 'ওয়াটার বোর্ডিং'-সহ বিবিধ আইনবহির্ভূত উপায়ে নির্যাতন চালানো হয়।[১] নির্যাতনের প্রকার ও মাত্রা এতই বেশি যে এই কারাগারকে ‘মর্ত্যের নরক’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। [২] বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ সত্ত্বেও এই কারাগারটিকে অব্যাহতভাবে নির্যাতনের জন্য ব্যবহার করতে থাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে একে মার্কিনীদের ‘লজ্জা’ হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে।[৩]
এই কারাগারটি ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূ-খণ্ডের বাইরে কিউবার দক্ষিণ-পূর্ব পাশে ক্যারিবীয় সাগরে এর অবস্থান। ১৪ই জানুয়ারি ২০১২ তারিখে প্রকাশিত আল জাজিরা টেলেভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ৮০০ জন বন্দীকে মুক্তি দেয়ার পর এ কারাগারে বিভিন্ন দেশের ১৭১ জন বন্দী আটক আছে। এই কারাগারে মার্কিন-বিরোধী তৎপরতায় সংশ্লিষ্ট জঙ্গী, সন্ত্রাসী ও গুপ্তচর সন্দেহে বিভিন্ন দেশের নাগরিককে আটক রাখা হয়।[৪] এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই বন্দীশালায় বিনা বিচারে আট বৎসর আটক থাকার পর ১৯৮ জনের মধ্যে ১৩০ জনেরও বেশি বন্দী নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন।[৫] এ পর্যন্ত মাত্র ৬ জন বন্দীকে বিচারের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত করা সম্ভব হয়েছে।[৩]
ইতিহাস
[সম্পাদনা ]১১ জানুয়ারি ২০০২ তারিখে কিউবার দক্ষিণ-পূর্বে ক্যারিবীয় সাগরে গুয়ানতানামো উপসাগরে কিউবার মাটিতে মার্কিন নৌবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে এই কারাগারটি স্থাপন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। [৬] ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিউবার ৪৫ বর্গকিলোমিটার ভূমি নৌঘাটিঁ স্থাপনের উদ্দেশ্যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে অধিগ্রহণ করে। [৭] ১৯৯১ থেকে এই নৌঘাটিতে বন্দী আটক রাখা শুরু হয়। গুয়ানতানামো কারাগার স্থাপনের পর সর্বপ্রথম ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারিতে আফগানিস্তান থেকে ২০ জন বন্দীকে এখানে আনা হয়। [৬]
যাদের বন্দী রাখা হয়েছে
[সম্পাদনা ]এ কারাগারে যাদের বন্দী রাখা হয়েছে তাদের অধিকাংশের বিরূদ্ধে অভিযোগ আনা হয় নি বা আদালতে বিচারের সম্মুখীন করা হয় নি। [৮] প্রথম যাদের এ কারাগারে আটক করা হয় তারা আফগানিস্তানের তালেবান এবং অন্যান্য সন্দেহভাজন ২০জন ব্যক্তি। পরবর্তীতে যাদের আনা হয় তাদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন দেশের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তিতে লিপ্ত। কয়েকজন বন্দী ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-সিক্স, কানাডীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা গুপ্তচর হিসাবে কাজ করতো। [৯] বাংলাদেশের নাগরিক মোবারক নামীয় এক ব্যক্তিকে পাক-আফগান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা থেকে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই অক্টোবর তারিখে গ্রেফ্তার করা হয় এবং তাকে গুয়ানতানামো কারাগারে আটক রাখা হয়। তাকে কোনরূপ বিচার ব্যতিরেকে ২০০৬ সালের ১৫ই ডিসেম্বর তারিখ অবধি সেখানে তাকে আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। [১০]
ওবামার ঘোষণা
[সম্পাদনা ]বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ২১ জানুয়ারী। [১১] এর পর দিন অর্থাৎ ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ২১ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী নিন্দিত গুয়ানতানামো কারাগার বন্ধের জন্য লিখিত আদেশ স্বাক্ষর করে। তবে তার এ আদেশ নানা কারণে, বিশেষ ক'রে কংগ্রেসের বিরোধিতার মুখে, বাস্তবায়িত হয় নি। [১২] ভাষণে তিনি বলেছিলেন, "আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে পারি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাউকে নির্যাতন করবে না। দ্বিতীয়ত, গুয়ানতানামো কারাগার আমরা বন্ধ করব এবং এখন যারা সেখানে আটক আছে, তাদের বিষয়ে কী করণীয় অচিরেই সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।"
নির্যাতনের পদ্ধতি
[সম্পাদনা ]বন্দীদের অভিজ্ঞতা
[সম্পাদনা ]একজন বন্দী এই কারাগারকে 'মর্ত্যের নরক' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই বন্দীশালায় নির্যাতনের প্রকৃতি মানুষের কল্পনার অতীত।[২] তীব্র নির্যাতন এড়াতে বন্দীরা আত্মহত্যার চেষ্টা করে।[১৩]
বন্দীদের অধিকার, তথ্য আদায়ের জন্য নির্যাতন
[সম্পাদনা ]রাসুল বনাম বুশ মামলার বিষয়বস্তু ছিল এই যে, গুয়ানতানমো কারাগারে আটক বিদেশী ব্যক্তিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টের শরণাপন্ন হতে পারে কি-না। শাসনতন্ত্র অনুযায়ী বিনাবিচারে আটক বন্দীরা উচ্চ আদালতে রিট অফ হেবিয়াস করপাস দাখিল করতে পারে ; আদালত সরকারকে এ ব্যাপারে আটকের কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দিতে পারে এবং একই সঙ্গে নির্দ্দিষ্ট দিনে আটক ব্যক্তিকে সশরীরে আদালতে হাজির করারও নির্দ্দেশ দিতে পারে। সরকারের বক্তব্য ছিল এই যে, আটক ব্যক্তিরা বিদেশী নাগরিক বিধায় তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের এখতিয়ারে পড়ে না। সুপ্রিম কোর্টের সরকার পক্ষের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে। ৯জনের মধ্যে ৬জন বিচারক এই ঐকমতে পৌঁছান যে বিদেশী বন্দীরাও, মার্কিন নাগরিকদের মতোই, তাদের আটকের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মাকিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টের শরাণাপন্ন হতে পারে ;– আদালতের এখতিয়ার এখানে বারিত নয়।[১৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা ]- ↑ শিগগির বন্ধ হচ্ছে না গুয়ানতানামো কারাগার [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ ]
- ↑ ক খ গুয়ানতানামো কারাগার ‘মর্ত্যের এক নরক’ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ ]
- ↑ ক খ "মার্কিনিদের 'লজ্জা' গুয়ানতানামো"। ২০১৪-০৮-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-১২।
- ↑ "প্রথম আলো পত্রিকায় ১৪-০১-২০১২ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদন"। ২০১৪-০৮-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-১২।
- ↑ কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রতিবেদন।
- ↑ ক খ নরকের বয়স নয়ে পড়ল
- ↑ হিস্টোরি নিউজ নেটওয়ার্ক
- ↑ নরকের বয়স নুয়ে পড়ল
- ↑ বন্দিদের অনেকে গুপ্তচর ছিলেন [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ ]
- ↑ দৈনিক প্রথম আলো, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯।
- ↑ "রয়টারের খবর"। ৩০ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১২।
- ↑ ১৯-০২-২০১১ তারখে পত্রিকায প্রকাশিত প্রতিবেদন
- ↑ "গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দির মৃত্যু"। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১২।
- ↑ ২৪শে এপ্রিল ২০০৫ তারখের প্রতিবেদন