বিষয়বস্তুতে চলুন
উইকিপিডিয়া একটি মুক্ত বিশ্বকোষ

শেন কুও

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শেন কুও
沈括
আধুনিক শিল্পীর কল্পনায় শেন কুও
জন্ম১০৩১
মৃত্যু১০৯৫
রুংঝৌ, সুং সাম্রাজ্য
পরিচিতির কারণভূ-আকৃতিবিজ্ঞান, জলবায়ু পরিবর্তন, বায়ুমণ্ডলীয় প্রতিসরণ, প্রকৃত উত্তর, আপাত পশ্চাদপসরণ, সূচীছিদ্র ক্যামেরা, ত্রিমাত্রিক মানচিত্র, ধ্রুবতারার অবস্থান নির্ণয়, চান্দ্রসৌর বিভ্রাটের সংশোধন
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রভূতত্ত্ব, জ্যোতির্বিজ্ঞান, প্রত্নতত্ত্ব, গণিত, ফার্মাকোলজি, চৌম্বকবিদ্যা, আলোকবিজ্ঞান, হাইড্রলিক্স, অধিবিদ্যা, আবহবিদ্যা, জলবায়ুবিজ্ঞান, ভূগোল, মানচিত্রাঙ্কনবিদ্যা, উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রাণীবিদ্যা, স্থাপত্য, কৃষিবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সামরিক কৌশল, নৃকুলবিজ্ঞান, সঙ্গীত, ভবিষ্যদ্দর্শন
প্রতিষ্ঠানসমূহহানলিন শিক্ষায়তন
চীনা নাম
চীনা 沈括
প্রতিলিপিকরণ
প্রমিত চীনা
হান-ইউ ফিনিন Shěn Kuò
ওয়েড-জাইলস Shen3 K'uo
আধ্বব [ʂə̀n khwɔ̂]
য়ুএ: ক্যান্টনীয়
ইয়েল রোমানীকরণ Sám Kut
জাউটপিং Sam2 Kut3
দক্ষিণ মিন
তাই-লো Sím Kuat
এটি একটি চীনা নাম; পারিবারিক নামটি হল শেন।

শেন কুও (চীনা: 沈括; ১০৩১-১০৯৫), ভদ্রতামূলক নাম কুন্‌ঝং (存中) এবং ছদ্মনাম মেংকি (বর্তমানে সাধারণত বলা হয় মেংশি) ওয়েং (夢溪翁),[] ছিলেন সুং রাজবংশের (৯৬০-১২৭৯) সমসাময়িক একজন হান চীনা বহুবিদ্যাবিশারদ বিজ্ঞানী ও কূটনৈতিক। বিদ্যা ও রাষ্ট্রচালনার বহু ক্ষেত্রে সুদক্ষ এই ব্যক্তি ছিলেন একাধারে একজন গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, আবহবিদ, ভূতাত্ত্বিক, প্রাণীবিদ, উদ্ভিদবিদ, ঔষধ বিশেষজ্ঞ, কৃষিবিদ, প্রত্নতাত্ত্বিক, নৃকুলবিজ্ঞানী, মানচিত্র বিশারদ, বিশ্বকোষ গঠক, সামরিক অধিকর্তা, কূটনৈতিক, হাইড্রলিক ইঞ্জিনিয়ার, আবিষ্কারক, শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, সরকারী রাজ্য পরিদর্শক, কবিসঙ্গীতজ্ঞ। তিনি ছিলেন সুং রাজসভার জ্যোতির্বিজ্ঞান দপ্তরের মুখ্য সচিব ও রাষ্ট্রীয় আতিথেয়তা বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী।[] তার রাজনৈতিক আনুগত্য ছিল সংস্কারপন্থী প্রধানমন্ত্রী ওয়াং আনশির (১০২১-১০৮৬) নেতৃত্বাধীন 'নবনীতি বিভাগের' প্রতি।

তার অন্যতম কীর্তি, ১০৮৮ খ্রিঃ রচিত স্বপ্ন সরোবর রচনাবলী বা স্বপ্ন প্রবাহ রচনাবলী-তে[] (夢溪筆談; মেংশি বিতান) শেন প্রথম চৌম্বকীয় সূচীমুখ কম্পাসের বর্ণনা দেন, যা পরবর্তীতে দিক নির্ণয়ের কাজে ব্যবহার হতে শুরু করে। ইউরোপে এই যন্ত্রের আবিষ্কর্তা ছিলেন আলেকজান্ডার নেক্যাম (১১৮৭)।[] [] শেন চৌম্বক উত্তর মেরুর দিকে চৌম্বক বিষুবলম্বের মানের ভিত্তিতে প্রকৃত উত্তরের ধারণায় উপনীত হন।[] নিরালম্ব চৌম্বক সূচ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা, ও শেনেরই আবিষ্কৃত মধ্যরেখাতল নির্ণয়ের নিখুঁততর পদ্ধতিতে নির্ণীত ধ্রুবতারা ও প্রকৃত উত্তরের দূরত্বের পরিমাপ এই আবিষ্কারের সহায়ক হয়েছিল।[] মানবসভ্যতার ইতিহাসে কম্পাস যন্ত্রটিকে দিক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আরও উপযোগী করে তোলার ক্ষেত্রে এটি ছিল এক যুগান্তকারী আবিষ্কার, আর ইউরোপে এই ধারণা পৌঁছেছিল সম্ভবত আরও চারশো বছর পর (১৪৫০ এর কাছাকাছি সময়ে তৈরি জার্মান সূর্যঘড়িতে ব্যবহৃত বিষুবলম্বের ধারণায় প্রাথমিক চীনা কম্পাসের সাথে সাদৃশ্য দেখা যায়)।[] []

সহকর্মী ওয়েই পুয়ের সাথে শেন কুও চাঁদ এবং গ্রহসমূহের কক্ষপথ নির্ণয়ের লক্ষ্যে পাঁচ বছর ধরে দৈনিক পর্যবেক্ষণের একটি দুরূহ কর্মসূচী নেন, কিন্তু রাজসভায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের আপত্তিতে এই পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়।[] তার জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত কাজকর্মে শেন কুও আর্মিলারি গোলক, নোমোন ও দর্শন চোঙের উন্নততর নকশা নির্মাণ করেন এবং উন্নততর জল ঘড়ি আবিষ্কার করেন। ভূভাগের রূপ পরিবর্তনের একটি ভূতাত্ত্বিক ধারণার অবতারণা করে শেন কুও ভূ-আকৃতিবিজ্ঞান শাস্ত্রটিতে অবদান রাখেন। এই ধারণাটি লাভ করতে তার সামুদ্রিক জীবাশ্মের জ্ঞান, ভূমিক্ষয়ের ধারণা ও নদীর সঞ্চয়কার্যের জ্ঞান সহায়ক হয়েছিল।[১০] তিনি চীনের উত্তরাংশে এক এমন স্থানে প্রস্তরীভূত বাঁশের সন্ধান পান যেখানে সমকালীন জলবায়ুতে বাঁশের বৃদ্ধি অসম্ভব ছিল। এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের ধারণায় উপনীত হন। চীনে প্রথম তারই লেখায় ড্রাই ডক সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়, আর সদ্য আবিষ্কৃত পাউন্ড লকের উপযোগিতা সম্বন্ধেও তিনি লেখালেখি করেছিলেন। আরব বিজ্ঞানী আল-হাসান ইবনে আল হাইসাম (৯৬৫-১০৩৯) সূচীছিদ্র ক্যামেরার জনক হলেও শেন কুও চীনে প্রথম এই যন্ত্রটি আবিষ্কার করেন হাইসামের বেশ কয়েক দশক পর। শেন কুও বি শেং-এর (৯৯০-১০৫১) আবিষ্কৃত সঞ্চরণশীল টাইপ মুদ্রণের উপরেও প্রচুর লেখালেখি করেন এবং তার লেখার সূত্রেই পরবর্তী প্রজন্মসমূহে বি শেঙের অবদান অবিস্মৃত হয়ে আছে।[১১] চীনের একটি প্রথা অনুযায়ী তিনি একবার সীমান্ত পরিদর্শন করার সময়ে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের একটি ত্রিমাত্রিক মানচিত্র নির্মাণ করেন। একবার একটি যন্ত্র তিনি স্বহস্তে মাটি খুঁড়ে বার করেন এবং কোনও প্রাচীন আড়ধনুক হিসেবে তার বর্ণনা দেন। পরবর্তীকালে জানা যায় ওটি ছিল আসলে একটি জেকবের ছড়ি; এক প্রকার সমীক্ষণ যন্ত্র যা ইউরোপে প্রথম প্রচলন করেন লেভি বেন গার্সন, ১৩২১ খ্রিঃ।

স্বপ্ন সরোবর রচনাবলী ছাড়াও শেন কুও অনেক লিখেছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই সমস্ত লেখা টিকিয়ে রাখা যায়নি। তার কিছু কবিতা মরণোত্তর রেফারেন্স লেখালেখির মাধ্যমে ইতস্তত নথিভুক্ত আছে। তার মনোযোগের অধিকাংশই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিকে নিবিষ্ট থাকলেও ভবিষ্যদ্দর্শন ও অতিলৌকিকের প্রতিও তার আগ্রহ ছিল। তিনি একাধিক ব্যক্তির মুখে শোনা অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তুর চাক্ষুষ অভিজ্ঞতার কথা প্রাঞ্জল ভাষায় বর্ণনা করে গেছেন। প্রাচীন দাওবাদকনফুসীয় ধর্মের বিভিন্ন পুঁথির উপরেও তিনি টীকা লিখে গেছেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা ]
  1. ইয়াও (২০০৩), ৫৪৪।
  2. নীডহ্যাম (১৯৮৬), ৪র্থ খণ্ড, দ্বিতীয় ভাগ, ৩৩।
  3. (ইংরেজি)জন মেকহ্যাম (২০০৮)। China: The World's Oldest Living Civilization Revealed। Thames & Hudson। পৃষ্ঠা 239। আইএসবিএন 978-0-500-25142-3 
  4. (ইংরেজি)Bowman (2000), 599.
  5. (ইংরেজি)Mohn (2003), 1.
  6. (ইংরেজি)Sivin (1995), III, 22.
  7. (ইংরেজি)Embree (1997), 843.
  8. Temple (1986), 115.
  9. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; sivin 1995 III 18 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  10. Sivin (1995), III, 23–24.
  11. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; bowman 2000 105 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন।

AltStyle によって変換されたページ (->オリジナル) /