বিষয়বস্তুতে চলুন
উইকিপিডিয়া একটি মুক্ত বিশ্বকোষ

রূপচাঁদ অধিকারী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুদ্রণযোগ্য সংস্করণটি আর সমর্থিত নয় এবং এতে রেন্ডারিং ত্রুটি থাকতে পারে। দয়া করে আপনার ব্রাউজারের বুকমার্কগুলি হালনাগাদ করুন এবং এর পরিবর্তে দয়া করে ব্রাউজারের মুদ্রণ করার ফাংশনটি ব্যবহার করুন।
রূপচাঁদ অধিকারী
জন্ম১৭২২
মৃত্যু১৮০২ (বয়স ৭৯–৮০)
মৃত্যুর কারণবার্ধক্য
পেশাসাধক, গায়ক, গীতিকার, সুরকার,
পরিচিতির কারণঢপ গান, কীর্তন
শৈলীঢপ গান

রূপচাঁদ অধিকারী ঢপ কীর্তনের প্রবর্তক। তিনি মুর্শিদাবাদের মনোহরশাহী ঘরানার সঙ্গীতকে কীর্তনের আঙ্গিকে হালকা সুরের ছন্দে নতুন করে উপস্থাপনা করেন। যা পরে অষ্টাদশ শতাব্দীতে ঢপ কীর্তন নামে পরিচিতি লাভ করে বিখ্যাত হয়। তিনি মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় জন্মগ্রহণ করেন।[] []

তিনি প্রথম জীবনে শ্রীমদ্ভাগবতের কথকতা করতেন। পরে ঢপ-কীর্তনের জন্য খ্যাতি লাভ করেন। তিনি মোহন দাসের 'ছুট' সঙ্গীত সৃষ্টি করেন, ঢপকীর্তনে অভিনবত্ব দান করেন।[] তাঁর কীর্তনে মুগ্ধ হয়ে বেলডাঙার জমিদার জগৎশেঠ তাঁকে কয়েক বিঘা নিষ্কর জমি প্রদান করেন।[]

জন্ম ও প্রথম জীবন

আনুমানিক ১৭২২ সালে বেলডাঙায় বাবার মামার বাড়িতে রূপচাঁদ অধিকারীর জন্ম। তার বাবা ছিলেন প্রাণকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়। তাদের প্রকৃত আদি বাড়ি কান্দি মহকুমার সালার থানার তালিবপুরে ছিল। তার বাবাকে নিঃসন্তান মামা বেলডাঙায় নিজের বাড়িতে এনে রেখেছিলেন। প্রাণকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় দেবসেবা ও শিষ্যদের দীক্ষাদানের কারণে ‘অধিকারী’ উপাধি পান। জন্ম থেকেই রূপচাঁদ অধিকারীর সঙ্গীতের প্রতি বিশেষ অনুরাগ ছিল । পরে গৃহত্যাগ করে মুর্শিদাবাদের সালারের অনতিদূরে শিমুলিয়া গ্রামে এক সন্ন্যাসীর কাছে প্রচলিত সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করেন। সন্ন্যাসী তাঁর সঙ্গীত অনুরাগে মুগ্ধ হয়ে একটি বাদ্যযন্ত্র ডুবকি উপহার দেন। তিনি ঢপ কীর্তনে অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে ওই ডুবকিও ব্যবহার করতেন।[] []

ঢপকীর্তনের সূচনা

কীর্তন বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেন রূপচাঁদ অধিকারীই প্রথম মুর্শিদাবাদের অন্যতম ঘরানা বা মনোহরশাহীকে ভেঙে হাল্কা সুরের সৃষ্টি করেন। এই কীর্তন গানই জনসমাজে ঢপ কীর্তন নামে পরবর্তীতে জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রচলিত কীর্তন গানের থেকে ঢপ কীর্তন ছিল অনেক সহজ, সরল ও লৌকিক ধারার। এমনকী অনেকের দাবি সেই সময় হিন্দু শ্রাদ্ধবাসরেও ঢপ কীর্তন গাওয়া হতো। সাধারণ পালা কীর্তনের মতো রূপচাঁদ ঢপ কীর্তনে দান, মাথুর, মান, নৌকা বিলাস পালার প্রচলন ঘটিয়েছিলেন। রূপচাঁদের দেখানো পথ ধরে পরে অঘোর দাস, দ্বারিক দাস, মধুসূদন কান, মোহন দাসের মতো শিল্পীরা খ্যাতি পেয়েছিলেন।[] লোকশিল্পী গবেষক পুলকেন্দু সিংহ বলেন,

" ঢপ হল প্রচলিত কীর্তন গানের সরলীকরণ রূপ। কীর্তন গানের রসিকরা এই রীতিকে পছন্দ করতেন না। কিন্তু, জনসমাজে এই ধারার জনপ্রিয়তা ছিল সর্বাধিক। "

বেলডাঙার বাড়ি

বেলডাঙার জমিদার জগৎশেঠ রূপচাঁদ অধিকারীর গানে মুগ্ধ হয়ে করমুক্ত কিছু কৃষিজমি ও দালান বাড়িটি তৈরি করে দেন। ১৮০২ সালে এই দালান বাড়িতেই মৃত্যু হয় রূপচাঁদের। সংস্কারের অভাবে দালান বাড়ির শিল্পকর্ম নষ্ট হয়ে গেছে। সংরক্ষণের অভাবে সন্ন্যাসীর দেওয়া ঐতিহাসিক ডুবকি সহ রূপচাঁদের অনবদ্য পদগুলি এখানে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় মানুষ তার বাড়িটির সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।[]

তথ্যসূত্র

  1. বসু, অঞ্জলি; গুপ্ত, সুবোধ চন্দ্র সেন (২০১০)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান: প্রায় চার সহস্রাধিক জীবনী-সংবলিত আকর গ্রণ্থ. প্রথম খন্ড। Sāhitya Saṃsada। আইএসবিএন 9788179551356 
  2. "সঙ্গীত - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-০৩ 
  3. "ঢপ কীর্তনের প্রবর্তক রূপচাঁদ অধিকারীর বেলডাঙার বাস্তুভিটে সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবি"www.bartamanpatrika.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-০৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ ]
  4. দুর্গাদাস লাহিড়ি (এপ্রিল ২০০১)। বাঙালির গান। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি। পৃষ্ঠা ৪০০-৪২০। 
  5. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। সাহিত্য সংসদ। জানুয়ারি ২০০২। 

৬. 'পর্যটনে মুর্শিদাবাদ' - দীননাথ মণ্ডল।। অণিমা প্রকাশনী, কলকাতা।।


বাংলার লোকসঙ্গীত
আঞ্চলিক গান
ব্যবহারিক গান
বিবাহ সম্পর্কিত
খেলা সম্পর্কিত
শোক সঙ্গীত
আনুষ্ঠানিক গান
প্রেম সঙ্গীত
কর্ম সঙ্গীত
পটের গান
বিবিধ

AltStyle によって変換されたページ (->オリジナル) /