মীর জুমলা গেট
মীর জুমলা গেট | |
---|---|
ঢাকা গেট | |
মানচিত্র | |
সাধারণ তথ্য | |
স্থাপত্য রীতি | মুঘল স্থাপত্য |
অবস্থান | ঢাকা, বাংলাদেশ |
নির্মাণকাজের সমাপ্তি | ১৭শ শতাব্দী |
নকশা এবং নির্মাণ | |
স্থপতি | মীর জুমলা |
মীর জুমলার গেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার একটি ঐতিহাসিক মোগল স্থাপনা। এই গেটটি ঢাকা গেট, ময়মনসিংহ গেট নামেও পরিচিত। [১] বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার কার্জন হল ছাড়িয়ে দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমি যেতে চোখে পড়ে হলুদ রঙের মীর জুমলার তোরণ। এ গেটের তিনটি অংশের একটি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবায়নযোগ্য শক্তি গবেষণা কেন্দ্রের দিকে, মাঝখানের অংশ পড়েছে রোড ডিভাইডারের মাঝে এবং অপর অংশটি রয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে তিন নেতার মাজারের পাশে।[১]
ইতিহাস
[সম্পাদনা ]ব্রিটিশ সময়কার ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট চার্লস ডয়'স মূল শহরের সঙ্গে রেসকোর্সকে সংযুক্ত করার জন্য ময়দানের উত্তর-পূর্ব দিকে একটি সড়ক তৈরি করেন। এই সড়কের প্রবেশপথে তৈরি করা হয় দুটি স্তম্ভ। অপর এক তথ্যে বলা হয়েছে, ইসলাম খাঁর আমলে রমনা অঞ্চলে ছিল বাগে বাদশাহী নামে মোগল উদ্যান। বাগে বাদশাহীর প্রবেশপথে ছিল দুটি স্তম্ভ। পরে তা পুনর্নির্মাণ করে নামকরণ করা হয় ময়মনসিংহ গেট।[১]
নামকরণ
[সম্পাদনা ]মোগল আমলে বুড়িগঙ্গা নদী হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করতে ব্যবহার করা হতো এ তোরণ। সেই সময় এর নাম ছিল 'মীর জুমলার গেট'। পরে কখনও 'ময়মনসিংহ গেট', কখনও 'ঢাকা গেট' এবং অনেক পরে নামকরণ করা হয় 'রমনা গেট'। এ গেট রমনায় প্রবেশ করার জন্য ব্যবহার করা হতো বলে পরে সাধারণ মানুষের কাছে এটি রমনা গেট নামেই পরিচিতি পায়। তবে বাংলাদেশ সরকারের গেজেট অনুসারে এ তোরণ এবং আশপাশের জায়গার নাম দেওয়া হয়েছে 'মীর জুমলার গেট'।[২]
ঐতিহাসিক স্থাপনা
[সম্পাদনা ]তোরণের স্তম্ভগুলো পরীক্ষা করেন এ. এইচ. দানী। তার মতে, এগুলো মোগল আমলে তৈরি হয়নি। কারণ স্তম্ভ দুটির গড়ন ইউরোপীয় ধাঁচে মূল শহরের সঙ্গে রেসকোর্সকে যুক্ত করার জন্য রেসকোর্সের উত্তর-পূর্ব দিকে একটি রাস্তা তৈরি করেন তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট চার্লস ডস। এ রাস্তার প্রবেশমুখে ডস এ দুটি স্তম্ভ তৈরি করেন। যা এখনও অটুট রয়েছে। বর্তমান নজরুল এভিনিউর রাস্তাটিও ডস তৈরি করেন। 'বাগে বাদশাহী' নামে মোগল উদ্যানটি ইসলাম খাঁর আমলে ছিল রমনা অঞ্চলে (যেটি বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও পুরনো হাইকোর্ট ভবন)।[২] হাইকোর্ট ভবনের পূর্ব কোণে একই ধরনের দুটি স্তম্ভবিশিষ্ট প্রবেশপথ ছিল। মূলত সে সময় এ স্তম্ভের মধ্য দিয়ে চলাচল ছিল হাতির। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ওসমানী উদ্যান থেকে মীর জুমলার কামানটি সরিয়ে মীর জুমলা গেটের সামনে স্থাপন করা হয়।[৩]
গঠন
[সম্পাদনা ]প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ ইঞ্চি ব্যাসার্ধ এ ধরনের স্তম্ভ খুবই বিরল। যার ওপরে রয়েছে কারুকাজ করা চারকোনা বিশিষ্ট একটি শেড। পশ্চিম পাশের বড় স্তম্ভের পাশেই রয়েছে অপেক্ষাকৃত ছোট আরেকটি স্তম্ভ। যার মাঝে টানা অবস্থায় রয়েছে একটি দেয়াল।[২] উঁচু থেকে নিচুতে নামা এ দেয়ালটি প্রায় ২০ ইঞ্চি চওড়া। কিন্তু পূর্ব পাশের বড় স্তম্ভের সঙ্গে দেয়াল বা প্রাচীর থাকলেও নেই ছোট স্তম্ভ।
চিত্রশালা
[সম্পাদনা ]-
মীর জুমলা গেট। এর তিনটি অংশ। ছবিতে তিন নেতার মাজারের দক্ষিণ পাশের অংশটি দেখা যাচ্ছে। ছবিটি ২০০৯ সালে তোলা।
-
মীর জুমলা গেট। ছবিতে সড়কের উপর মাঝের অংশটি দেখা যাচ্ছে। ২০১৮ সালের ছবি।
-
ঢাকা গেট বা মীর জুমলা গেটের পশ্চিম পাশে স্থাপিত বিবি মরিয়ম কামান। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এটি ওসমানী উদ্যান থেকে এনে এখানে স্থাপন করা হয়।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা ]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা ]- ↑ ক খ গ ধ্বংসের পথে মোগল স্থাপনা মীর জুমলার গেট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে।
- ↑ ক খ গ "অরক্ষিত মীর জুমলা গেট"। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ নতুন ঠিকানায় ৩৫০ বছর পুরনো মীর জুমলার কামান, কালের কণ্ঠ, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩