দগ্ধমৃত্তিকা
- Afrikaans
- Alemannisch
- العربية
- Asturianu
- Azərbaycanca
- Bikol Central
- Беларуская
- Беларуская (тарашкевіца)
- Български
- Bosanski
- Català
- کوردی
- Čeština
- Чӑвашла
- Dansk
- Deutsch
- Ελληνικά
- English
- Esperanto
- Español
- Eesti
- Euskara
- فارسی
- Suomi
- Na Vosa Vakaviti
- Français
- Frysk
- Gaeilge
- Kriyòl gwiyannen
- Galego
- עברית
- हिन्दी
- Hrvatski
- Kreyòl ayisyen
- Magyar
- Հայերեն
- Interlingua
- Bahasa Indonesia
- Ido
- Italiano
- 日本語
- Jawa
- ქართული
- Gĩkũyũ
- Қазақша
- 한국어
- Кыргызча
- Latina
- Lietuvių
- Latviešu
- Македонски
- Монгол
- Bahasa Melayu
- Napulitano
- Plattdüütsch
- Nederlands
- Norsk nynorsk
- Norsk bokmål
- Occitan
- Polski
- Português
- Runa Simi
- Română
- Русский
- Саха тыла
- Sicilianu
- Scots
- Srpskohrvatski / српскохрватски
- සිංහල
- Simple English
- Slovenčina
- Slovenščina
- Shqip
- Српски / srpski
- Svenska
- தமிழ்
- Тоҷикӣ
- ไทย
- Tagalog
- Türkçe
- Українська
- اردو
- Oʻzbekcha / ўзбекча
- Tiếng Việt
- 吴语
- ייִדיש
- 中文
- 閩南語 / Bân-lâm-gú
- 粵語
দগ্ধমৃত্তিকা বা ইংরেজি পরিভাষায় "সিরামিক" (Ceramic) এমন এক ধরনের ধাতব, অধাতব ও ধাতুকল্প বিভিন্ন অজৈব পদার্থের মিশ্রণে প্রস্তুত কৃত্রিম উপাদান, যাকে উচ্চ তাপমাত্রায় পুড়িয়ে কঠিন পদার্থে পরিণত করে শিল্পকর্ম, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সামগ্রী, গৃহস্থালি কাজে প্রয়োজনীয় সামগ্রী এবং চিত্তাকর্ষক সামগ্রী নির্মাণে ব্যবহার করা হয়। একে কুমোরের মাটিও বলা হতে পারে। দগ্ধমৃত্তিকাজাত পণ্যের মধ্যে আছে কাচ, পোড়ামাটির বাসনপত্র, চীনামাটির বাসন, চীনামাটি, ইটের টালি, টেরাকোটা, রিফ্রাকটরিজ, সিমেন্ট, চুন এবং জিপসাম।[১]
ইতিহাস
[সম্পাদনা ]মৃৎকর্ম সম্ভবত মানব সভ্যতার সবচেয়ে পুরাতন শিল্প। প্রথমদিকে মাটি দিয়ে শিল্পকর্ম শুরু হয়ে পরবর্তীকালে তা বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে অন্যান্য মাধ্যম, যেমন কাঠ, পাথর, ঝিনুক, ধাতব পদার্থ ইত্যাদির শিল্পকর্মে রূপ লাভ করে। সিরামিকের যুগ শুরু হওয়ার পূর্বে বাংলাও এ সমস্ত স্তর অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশে আধুনিক সিরামিক শিল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৮ সালে, বগুড়ায় তাজমা সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লি. প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। এর উৎপাদন অত্যন্ত সীমিত ছিল এবং উৎপাদিত পণ্যের মানও তেমন একটা ভাল ছিল না। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লি. প্রতিষ্ঠিত হয় প্রধানত স্থানীয় বাজারে পণ্য সরবরাহের জন্য এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই কারখানার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় পিপলস সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড । কারখানাটি ১৯৬৬ সালে উৎপাদন শুরু করেছিল।[১]
দগ্ধমৃত্তিকা উৎপাদনের মূলনীতি
[সম্পাদনা ]মূল উপাদানগুলো মিশিয়ে উত্তপ্ত করা হয়। ৬০০°-৬৫০°Cএর মাঝে চায়না ক্লের পানি শুকিয়ে অদানাদার পদার্থ অ্যালুমিনা ও সিলিকার মিশ্রণ উৎপন্ন হয়। ১০০০°C তাপমাত্রায় দানাদার অ্যালুমিনা ও সিলিকা ফেলস্পারের উপস্থিতিতে বিগলিত হয়ে মুলাইট গঠন করে। ১৪০০°-১৫০০°C তাপমাত্রায় অবশিষ্ট সিলিকা ক্রিস্টোবেলাইটে পরিণত হয়। মুলাইট ও ক্রিস্টোবেলাইটের মিশ্রণকে বিস্কুট বলে।
(১) চীনামাটি নিরুদন:
Al2O3.2SiO2.2H2O → Al2O3 + 2SiO2 + 2H2O (650 °C তাপমাত্রায়)
চায়না ক্লে অ্যালুমিনা সিলিকা
(২) মুলাইট গঠন:
3Al2O3 + 4SiO2 → 3Al2O3.2SiO2 (1000°Cতাপমাত্রায়)
মুলাইট
(৩) ক্রিস্টোবেলাইট গঠন: 4nSiO2 → n(4SiO2) (1500°Cতাপমাত্রায়) সিলিকা ক্রিস্টোবেলাইট গ্লেজিং : পোড়া কাদামাটির তৈরি সিরামিক দ্রব্য শক্ত, ভঙ্গুর ও সূক্ষ্ম ছিদ্রযুক্ত অমসৃণ হয়। সেজন্য দ্রব্য মসৃণ ও উজ্জ্বল করার জন্য গ্লেজিং করা হয়। সাধারণ গ্লেজ মিশ্রণ হল- সিলিকা, এলুমিনা এবং পর্যায় সারণির গ্রুপ-IIA এর ধাতুর অক্সাইড। এসবের মিশ্রণ দিয়ে উত্তপ্ত করে গলিত কাচের পাতলা আবরণ তৈরি করা হয়। উচ্চ তাপমাত্রায় NaCl ছিটিয়ে গ্লেজ করা যায়। জলীয়বাষ্পের উপস্থিতিতে NaCl বিয়োজিত হয়ে Na2O ও HCl উৎপন্ন করে।
Na2O+SiO2 → Na2SiO3
গলিত সোডিয়াম সিলিকেট ছিদ্র বন্ধ করে মসৃণ করে।[২]
বাংলাদেশের দগ্ধমৃত্তিকা শিল্প
[সম্পাদনা ]বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে সফল দগ্ধমৃত্তিকাজাত দ্রব্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এটি উৎপাদন শুরু করে ১৯৮৫ সনে এবং খুবই উন্নতমানের চীনামাটির টেবিল-সরঞ্জাম উৎপাদন করে। এই কোম্পানি রপ্তানি বাজারে উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করেছে। লন্ডনে এর একটি বিক্রয় অফিস রয়েছে এবং ফ্রাঙ্কফুর্টে হাউজওয়্যার শো নামে এর একটি স্থায়ী স্টল রয়েছে। বিশ্বখ্যাত বোন চায়না এবং চীনামাটির টেবিল সরঞ্জাম প্রস্ত্ততের লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৭ সনে শাইনপুকুর সিরামিক লি. প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এই কোম্পানির অবস্থান গাজীপুরের বেক্সিমকো শিল্পনগরীতে। কোম্পানিটি চীনামাটির বাসন এবং চায়না উৎপাদন শুরু করেছিল যথাক্রমে এপ্রিল ১৯৯৯ এবং নভেম্বর ১৯৯৯-তে। ১৯৯৯ সনে বাণিজ্যিক উৎপাদনের শুরুতেই এটিকে দ্রুত উৎপাদনক্ষম প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কোম্পানিটি অভ্যন্তরীণ বাজারের প্রায় ৬০% দখল করেছে এবং এর সিরামিক টেবিল সরঞ্জাম বিশ্ববাজারেও সমাদৃত।
বাংলাদেশে উৎপাদিত ও রপ্তানিকৃত সিরামিক পণ্যের প্রায় ৯৫% কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। যে সমস্ত দেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি হয় সেগুলি হচ্ছে জাপান, জার্মানি, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারত। সিরামিক পণ্যের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে সাদা মাটি ও বালি। ১৯৫৭ সালে বাংলাদেশ সাদামাটির বৃহৎ মজুত আবিষ্কৃত হয় ময়মনসিংহের বিজয়পুর এলাকায়। উক্ত এলাকায় সাদামাটির মজুদের পরিমাণ নিরূপিত হয় ২৭ লক্ষ টন। সিলেটের জাফলং এলাকাতেও সাদামাটির সন্ধান পাওয়া গেছে। কিন্তু উক্ত এলাকাসমূহে মাটি বা বালি পরিশোধনের কোন কারখানা নেই।
বাংলাদেশের প্রায় সবকয়টি দগ্ধমৃত্তিকা পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সঠিক মান বজায় রাখা এবং সুনাম ধরে রাখার জন্য উন্নতমানের কাঁচামাল ব্যবহার করে। এসবের যন্ত্র ও সরঞ্জাম আধুনিক এবং উন্নত মানের। প্রতিটি দগ্ধমৃত্তিকা কেন্দ্রে নিজস্ব গবেষণাগার সুবিধা, মান নিয়ন্ত্রণ এবং পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে যে সমস্ত পণ্য বাজারজাত হচ্ছে সেগুলি হলো নৈশভোজসামগ্রী (ডিনার সেট), চা পরিবেশন-সামগ্রী (টি সেট), কফি পরিবেশন-সামগ্রী (কফি সেট), সুরুয়া পরিবেশন সামগ্রী (স্যুপ সেট), ফল পরিবেশন সামগ্রী (ফলের সেট), বাসন, পেয়ালা, ফুলদানি, মগ এবং বিভিন্ন ধরনের স্মৃতিচিহ্ন (সুভনির) জাতীয় পণ্য। অধিকাংশ দগ্ধমৃত্তিকাজাত পণ্যই বদ্ধ রন্ধনচুল্লীর তাপসহনশীল (ওভেনপ্রুফ) ও বাসনধৌতযন্ত্র-সহনশীল (ডিশওয়াশার প্রুফ) এবং এসবের কোন রাসায়নিক ক্ষতিকর প্রভাব নেই। বর্তমানে বাংলাদেশ ৪৫টিরও বেশি দেশে দগ্ধমৃত্তিকাজাত পণ্য রপ্তানি করছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং সুইডেন।[১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা ]- ↑ ক খ গ "সিরামিক শিল্প - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৪।
- ↑ "কাঁচ ও সিরামিক শিল্প"। 10 Minute School: HSC Section (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৬-১৪। ২০২০-০৬-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৪।