ইন্দো-মালয় জীবভৌগোলিক অঞ্চল
- العربية
- Беларуская
- Беларуская (тарашкевіца)
- Български
- Català
- Čeština
- Deutsch
- English
- Esperanto
- Español
- Euskara
- فارسی
- Français
- 贛語
- Galego
- עברית
- हिन्दी
- Hrvatski
- Magyar
- Bahasa Indonesia
- Italiano
- 日本語
- ქართული
- 한국어
- മലയാളം
- Кырык мары
- Bahasa Melayu
- नेपाली
- Nederlands
- Norsk nynorsk
- Norsk bokmål
- Polski
- Português
- Русский
- සිංහල
- Svenska
- ไทย
- Українська
- اردو
- Oʻzbekcha / ўзбекча
- Tiếng Việt
- West-Vlams
- 吴语
- მარგალური
- 中文
- 粵語
ইন্দো-মালয় জীবভৌগোলিক অঞ্চল, আটটি জীবভৌগোলিক অঞ্চল-এর মধ্যে একটি। এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ অংশ এবং পূর্ব এশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে বিস্তৃত।
জীবভূগোলবিদ্যায় একে প্রাচ্য জীবভৌগোলিক অঞ্চলও বলা হয়। ইন্দো-মালয় সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে নিম্ন দক্ষিণ চীন পর্যন্ত বিস্তৃত, এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে জাভা, বালি, এবং বোর্নিও পর্যন্ত পূর্বদিকে আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস-এর নামে পরিচিত ওয়ালেস রেখা পর্যন্ত। এই সীমানা ইন্দো-মালয়কে অস্ট্রালেশিয়া থেকে পৃথক করেছে। ইন্দো-মালয়ে আরও রয়েছে ফিলিপাইন, নিম্নভূমি তাইওয়ান এবং জাপান-এর রিউকু দ্বীপপুঞ্জ।
ইন্দো-মালয়ের বেশিরভাগ অংশই মূলত অরণ্যে আচ্ছাদিত ছিল। বেশিরভাগ অংশে ছিল ক্রান্তীয় এবং উপক্রান্তীয় আর্দ্র বড়পাতার অরণ্য, এবং ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলে প্রাধান্য ছিল ক্রান্তীয় এবং উপক্রান্তীয় শুষ্ক বড়পাতার অরণ্য-এর। ইন্দো-মালয়ের ক্রান্তীয় আর্দ্র বনাঞ্চলগুলির বেশিরভাগে আবার প্রধান্য ছিল (ডিপটেরোকার্পেসি) পরিবারের ডিপটেরোকার্প উদ্ভিদের।
প্রধান পরিবেশঅঞ্চলসমূহ
[সম্পাদনা ]ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড (ডাব্লুডাব্লুএফ) ইন্দো-মালয় জীবভৌগোলিক অঞ্চলটিকে তিনটি জৈব-অঞ্চলে বিভক্ত করেছে। যার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, জৈব-অঞ্চল হল "ভৌগোলিক ক্লাস্টারসমূহের পরিবেশ-অঞ্চলসমষ্টি, যেটি হতে পারে বিভিন্ন ধরনের আবাসস্থল, যাতে বিশেষ করে প্রজাতির স্তরের থেকেও ট্যাক্সোনোমিক স্তরে (গণ, পরিবার) শক্তিশালী জীবভৌগোলিক সম্বন্ধ রয়েছে "।
ভারতীয় উপমহাদেশ
[সম্পাদনা ]ভারতীয় উপমহাদেশের জৈব অঞ্চলটি ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তান-এর পূর্ব অংশ জুড়ে। হিন্দু কুশ, কারাকোরাম, হিমালয়, এবং পাতকই পর্বতশ্রেণি উত্তর-পশ্চিম, উত্তর এবং উত্তর-পূর্বে জৈব অঞ্চলটিকে আবদ্ধ করেছে। এই পর্বতশ্রেণিগুলি ৪৫ মিলিয়ন বছর আগে এশিয়ার সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-প্রবাহজনিত (ড্রিফ্টিং) সংঘর্ষের দ্বারা গঠিত হয়েছিল। প্যালিআর্কটিক জীবভৌগোলিক অঞ্চলের নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের উপ-ক্রান্তীয় ও ক্রান্তীয় উদ্ভিদ আর প্রাণিজগতের মুখ্য জীবভৌগোলিক সীমানা হল হিন্দু কুশ, কারাকোরাম এবং হিমালয়।
ইন্দোচিনা
[সম্পাদনা ]ইন্দোচিনা জৈব অঞ্চলটিতে রয়েছে মায়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়াসহ দক্ষিণ চীন-এর উপ-ক্রান্তীয় বনভূমি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মূলভূমির বেশিরভাগ অংশ।
সুন্দ তাক এবং ফিলিপাইন
[সম্পাদনা ]মালেসিয়া একটি উদ্ভিদ-সংক্রান্ত প্রদেশ যার সীমানা ইন্দো-মালয় এবং অস্ট্রালেসিয়ার মধ্যে প্রসারিত। এর অন্তর্গত মালে উপদ্বীপ এবং পশ্চিম ইন্দোনেশীয় দ্বীপ (সুন্দল্যান্ড নামে পরিচিত), ফিলিপাইন, পূর্ব ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং নিউ গিনি। যদিও মালেসিয়ার উদ্ভিদগুলোর মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত মিল রয়েছে, কিন্তু ওয়ালেস রেখার পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণির প্রজাতিসমূহের মধ্যে ফারাক অনেক বেশি; সুন্দল্যান্ডের প্রাণিজগৎ মূল এশীয় ভূখণ্ডের অনুরূপ, অন্যদিকে ওয়ালেস লাইনের পূর্বদিকের দ্বীপপুঞ্জের প্রাণী অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত , যেমন মার্সুপিয়াল নামের স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং রাটাইট নামের পাখি।
ইতিহাস
[সম্পাদনা ]ইন্দো-মালয়ের উদ্ভিদকুল, প্রাচীন অতিমহাদেশ লরেসিয়া এবং গন্ডওয়ানার উপাদানগুলির মিশ্রিত রূপ। গন্ডওয়ানিয়ান উপাদানগুলি প্রথমে ভারত থেকে পাওয়া। সেগুলি গন্ডওয়ানা থেকে প্রায় ৯০এমওয়াইএ আগে বিচ্ছিন্ন হ'য়ে উত্তর দিকে সরে যাওয়ার সময়, গন্ডোয়ানা থেকে প্রাপ্ত উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগৎ। এর মধ্যে সিচলিড মাছ এবং সপুষ্পক উদ্ভিদ পরিবার এর ক্রিপটেরোনিয়েসি এবং সম্ভবত ডিপটেরোকারপেসি ছিল। ৩০-৪৫ এমওয়াইএ আগে এশিয়ার সাথে ভারতের সংঘর্ষের পরে প্রজাতির আদান-প্রদান ঘটে। পরে, অস্ট্রেলিয়া-নিউ গিনির, উত্তর দিকে পরিচলন হওয়ার সাথে সাথে অস্ট্রেলিয়ান এবং এশিয়ান পাতগুলির সংঘর্ষে ওয়ালেস-এর দ্বীপগুলিকে ধাক্কা দেয়। এর পরিণামে ইন্দো-মালয় এবং অস্ট্রালেশিয়ার মধ্যে উদ্ভিজ বিনিময় হয়ে, সংকীর্ণ প্রণালী দিয়ে একে অপরের থেকে পৃথক হয়ে যায়। এশিয়ার অতিবৃষ্টি অরণ্যের উদ্ভিদগুলি, ডিপটেরোকার্প সহ, ওয়ালেস পেরিয়ে নিউ গিনিতে, এবং পোডোকার্প এবং আরাউকারিয়াসহ বেশ কয়েকটি গন্ডওয়ানিয়ান উদ্ভিদ পরিবার, অস্ট্রেলিয়া-নিউ গিনি থেকে পশ্চিমের মালেসিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পশ্চিমে চলে গেছে।
উদ্ভিদকুল
[সম্পাদনা ]ডিপারোকার্প (উপপরিবার ডিপটেরোকার্পোইডি) হ'ল ইন্দো-মালয়ের আর্দ্র এবং মৌসুমী শুষ্ক অরণ্যের বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ। সঙ্গে দেখা যায় বোর্নিওর আর্দ্র অরণ্যের বৈচিত্র্যে বৃহত্তম প্রজাতিসমূহকে।[১] সেগুন (টেকটোনা ) হল ইন্দো-মালয় মৌসুমী শুষ্ক অরণ্যের বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ। দেখা যায় ভারত থেকে ইন্দোচিনা, মালয়েশিয়া এবং ফিলিপাইনে। ক্রান্তীয় কলসপত্রী উদ্ভিদ (নেপেনথেস ) ইন্দো-মালয়ের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ উদ্ভিদ এবং এরও সর্বাধিক বৈচিত্র্যের প্রজাতিসমূহ সুমাত্রা, বোর্নিও এবং ফিলিপাইনে রয়েছে।
ইন্দো-মালয় ও অস্ট্রালেসিয়ার ক্রান্তীয় বনভূমিতে উদ্ভিদের অনেক বংশের সম্পর্ক রয়েছে, যারা লক্ষ লক্ষ বছর ধরে সুন্দল্যান্ড এবং নিউ গিনির মধ্যবর্তী অংশে দ্বীপগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছে। দুই উদ্ভিদকুল দীর্ঘ বিচ্ছিন্নভাবে বিবর্তিত হয়েছিল এবং জীবাশ্মের রেকর্ড থেকে জানা যায়, এশিয়ার প্রজাতিগুলি ৩৩ মিলিয়ন বছর আগে অস্ট্রালেসিয়ার উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে সেখানে ছড়িয়ে পড়া শুরু হয় এবং দু'টি মহাদেশ তাদের বর্তমান অবস্থানে পৌঁছানোর সাথে সাথে ১২ মিলিয়ন বছর আগে এই ছড়িয়ে পড়া বৃদ্ধি পায়। বিনিময়টি অসম ছিল। ইন্দো-মালয়ের আরও প্রজাতি অস্ট্রালেসিয়ায় ছড়িয়ে পড়লেও, অস্ট্রালেসিয়া থেকে ইন্দো-মালয়ে ছড়ানো ছিল কম।[২]
প্রাণিকুল
[সম্পাদনা ]স্তন্যপায়ী প্রাণীর দুটি বর্গ, কলুগো (ডার্মোপটেরা) এবং ট্রিশ্রু (স্ক্যানডেনসিয়া) এই জীবভৌগোলিক অঞ্চলের সর্বাধিক স্থানীয় প্রাণী, যেমন ক্রাসিয়োনিকটেরিডি পরিবারের (কিটিজ হগ-নোজড ব্যাট), ডায়াটোমায়িডে, প্লাটাক্যান্থোমাইডি, টারসিডি (টারসিয়ার) এবং হাইলোবাটিডি (গিবন)। ইন্দো-মালয়ের বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীর বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে চিতা, বাঘ, মহিষ, এশীয় হাতি, ভারতীয় গণ্ডার, জাভান গণ্ডার, মালায়ান টেপির, ওরাংউটান এবং গিবন।
ইন্দো-মালয়ে তিনটি স্থানীয় পাখির পরিবার রয়েছে, ইরেনিডি (ফেয়ারি ব্লুবার্ড), মেগালাইমিডে এবং রাবডর্নিথিডি (ফিলিপাইন ক্রিপার)। এছাড়া আরও বৈশিষ্ট্যযুক্ত পাখি হ'ল ফিজান্ট, পিট্টাস, ওল্ড ওয়ার্ল্ড ব্যাবলার (ছাতারে) এবং ফ্লাওয়ারপ্যাকার।
ইন্দো-মালয়ে ৮১ টি বর্গের ১০০০ প্রজাতির উভচর রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১৭ টি বিশ্ব প্রজাতির। ৮০০ ইন্দো-মালয়ের প্রজাতি বা ৮০% হ'ল স্থানীয়। এখানে তিনটি উভচর পরিবার রয়েছে, Nasikabatrachidaeনাসিকাবাত্রাচিডি, ইকথিওফিডি এবং ইউরাইওটাইফিলিডি। উভচরদের মধ্যে ৩২৯ বা ৩৩%, সঙ্কটজনক বা বিলুপ্ত হিসাবে বিবেচিত হয়। প্রধান কারণ, আবাসস্থলের ক্ষতি বা হ্রাস। [৩]
ইন্দো-মালয় অঞ্চলের প্রাণিকুলের আরও তথ্য এখানে উপলব্ধ: ইন্দো-মালয় জীবভৌগোলিক অঞ্চলের প্রাণিকুল
আরও দেখুন
[সম্পাদনা ]ইন্দোমালয় পরিবেশঅঞ্চলসমূহ (Indomalayan ecoregions)
[সম্পাদনা ]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা ]- ↑ Appanah, Simmathiri and Jennifer M. Turnbull, eds. (1998). A Review of Dipterocarps: Taxonomy, ecology and silviculture. Center for International Forestry Research, 1998.
- ↑ Ebach, Malte C. (2017). Handbook of Australasian Biogeography. CRC Press, Jan 6, 2017.
- ↑ Bain, R.H., Biju, S.D., Brown, R.M., Das, I., Diesmos, A.C., Dutta, S.K., Gower, D.J., Inger, R.F., Iskandar, D.T., Kaneko, Y., Neng, M.W., Lau, Meegaskumbura, M., Ohler, A., Papenfuss, T., Pethiyagoda, R., Stuart, B.L., & Wilkinson, M. (2008). Amphibians of the Indomalayan Realm. [১]