বিষয়বস্তুতে চলুন
উইকিপিডিয়া একটি মুক্ত বিশ্বকোষ

অমিয়া দত্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুদ্রণযোগ্য সংস্করণটি আর সমর্থিত নয় এবং এতে রেন্ডারিং ত্রুটি থাকতে পারে। দয়া করে আপনার ব্রাউজারের বুকমার্কগুলি হালনাগাদ করুন এবং এর পরিবর্তে দয়া করে ব্রাউজারের মুদ্রণ করার ফাংশনটি ব্যবহার করুন।
অমিয়া দত্ত
জন্ম১৯১৮
মৃত্যু২৭ এপ্রিল ১৯৪৯(1949年04月27日) (বয়স ৩০–৩১)
পরিচিতির কারণবাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামের কর্মী

অমিয়া দত্ত (১৯১৮ - ২৭ এপ্রিল ১৯৪৯) ছিলেন বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামের সক্রিয় কর্মী ও সমাজসেবী।

প্রাথমিক জীবন

অমিয়া দত্ত ১৯১৮ সালে বিক্রপুরের (বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেলা) বজ্রযোগিনী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম অতুলচন্দ্র গুহ এবং মাতা প্রিয়লতা গুহ। মাত্র ১২ বছর বয়সে অমিয়ার পিতা মারা যান। এবং এক বছর পরে মাত্র ১৩ বছর বয়সে অষ্টমশ্রেনীতে পড়ার সময় ঢাকা কালেকটরেটের কর্মী রবীন্দ্র মোহন দত্তের সাথে অমিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের কারণে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়। তবে বিয়ে হয়ে গেলেও তিনি প্রায়ই বজ্রযোগিনী গ্রামে এসে থাকতেন।

এসময় তিনি তার এলাকায় স্বাধীনতা সংগ্রামে বিপ্লবীদের কর্মকাণ্ড এবং গ্রামের লোকজনের বিপ্লবীদের সহায়তা করা এসব কিছু দেখে অমিয়ার মনে স্বদেশীকতা এবং দেশাত্মবোধ জাগ্রত হয়; তিনি প্রভাবিত হন বিপ্লবী ভাবধারায়। অমিয়ার ছোট ভাই রবি গুহ ছাত্রাবস্থাতেই কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন। ভাইয়ের কাছে তিনি মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদের দীক্ষা নেন। গোপনে গোপনে পারিবারিক অণুশাসনের উপেক্ষা করেই পার্টির কাজ করতে শুরু করেন।

কর্মজীবন

বিভিন্ন বাঁধা বিপত্তি এড়িয়ে ১৯৪৩ সালে অমিয়া দত্ত কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। ঐ বছর দূর্ভিক্ষের সময় ঢাকা শহরের সূত্রাপুর, গেণ্ডারিয়া, নারিন্দা, ওয়ারি, তাঁতিবাজার প্রভৃতি একালায় অমিয়া দত্তের নেতৃত্বে মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি ত্রাণের কাজে সক্রিয় উদ্যোগ নেয়। ঘরকন্যার সব কাজ করেও অমিয়া ত্রাণ শিবিরে দুঃস্থ অসহায় নারীদের আশ্রয়দানের কাজের সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন। গেণ্ডারিয়ায় অবস্থিত অনাথ শিশু ভবনটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও ছিল তার। বিক্রমপুরের আরেক প্রখ্যাত স্বাধীনতাসংগ্রামী ও সমাজসেবী কংগ্রেসনেত্রী আশালতা সেনের কাছ থেকে তিনি এ ব্যাপারে বহু সাহায্য পেয়েছিলেন।

১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ সরকার আন্দামান জেল থেকে কয়েকজন বন্দীকে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে এলে তাদের মধ্যে কয়েকজন কমরেড গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরেন। অসুস্থদের ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঢাকায় তখন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলছে। পার্টি থেকে অমিয়াকে অসুস্থ বন্দীদের সাথে যোগাযোগ করার দায়িত্ব দিলে ঐ মুসলমান অধ্যুষিত এলাকায় পুলিশের চোখ এড়িয়ে নার্সের বেশে তিনি পার্টির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, চিঠি এবং তথ্য আদান-প্রদান করতেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় অমিয়ার পরিবার ভারতে চলে যান। প্রথমে হাওড়ার কদমতলায় ও পরে বাজেশিবপুরে বাসা ভাড়া করেন। সেখানে গিয়েও তিনি পার্টি এবং মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির কাজে যুক্ত হয়ে পড়েন।

১৯৪৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গের ডুবরী ভেরী গ্রামের আন্দোলনে অনেক কৃষক শহীদ হন। এই সময়ে ব্যাপক ধরপাকরে বহু কমিউনিস্ট কারারুদ্ধ হন। জেলে অত্যাচারের বিরুদ্ধে এবং রাজনৈতিক বন্দীদের মর্যাদার দাবীতে তারা জেলের ভেতরেই সংগ্রাম শুরু করেন। এ সময় তাদের সমর্থনে বিভিন্ন সংগঠন থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। ২৭ এপ্রিল রাজবন্ধীদের মর্যাদা ও মুক্তির দাবিতে মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি কলকাতার ভারতসভা হলে সমাবেশের আয়োজন করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তদানিন্তন মুখ্যমন্ত্রী ড. বিধানচন্দ্র রায়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে ভারতসভা হল থেকে কয়েকশত মহিলার দৃপ্ত মিছিল বউবাজার কলেজ স্ট্রিট সংযোগস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশ মিছিলে গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে লিতকা সেন, প্রতিভা গাঙ্গুলী, গীতা সরকার ও যুবকর্মী বিমান ব্যানার্জিসহ অমিয়া দত্ত নিহত হন।[] []

তথ্যসূত্র

  1. বিশ্বাস, বনানী (২০১৯-০৪-২৭)। "আমি সেই মৃত্যুহীন, মাতৃহারা সাতাশে এপ্রিল"বাঙালীয়ানাকলকাতা । সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৬ 
  2. Mitra, Tripti (২০১৮-০৫-১৬)। "সম্পাদক সমীপেষু: সেই নক্ষত্রেরা"আনন্দবাজার পত্রিকা কলকাতা । সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৬ 

AltStyle によって変換されたページ (->オリジナル) /