বিষয়বস্তুতে চলুন
উইকিপিডিয়া একটি মুক্ত বিশ্বকোষ

খাজা ইউনুস আলী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা Mehedi Abedin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৫:২২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

Mehedi Abedin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৫:২২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত সংস্করণ
খাজা ইউনুস আলী
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম১৮৮৬
মৃত্যু১৯৫২
সমাধিস্থলএনায়েতপুর, সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ
ধর্মইসলাম
মুসলিম নেতা
ভিত্তিকএনায়েতপুর দরবার শরীফ
কাজের মেয়াদআঠারো শতাব্দির শেষের দিকে এবং উনবিংশ শতাব্দির শুরুর দিকে
পূর্বসূরীখাজা ওয়াজেদ আলী
উত্তরসূরীখাজা হাশেম উদ্দিন
ওয়েবসাইটkhwajaenayetpuri.org

খাজা ইউনুস আলী বেশি পরিচিত খাজা এনায়েতেপুরী নামে। বিশিষ্ট পীর ও সাধক খাজা মোহাম্মদ ইউনুস আলী জন্ম গ্রহণ করেন ১৮৮৬ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির পাবনা জেলার এনায়েতপুরে (বর্তমান বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলায়)[] তিনি ছিলেন একজন সুফি সাধক। তার পিতার নাম শাহ সুফী মৌলানা আবদুল করিম। তিনি এলাকায় খাজা পীর বলেই বেশি পরিচিত ছিলেন। এই তরিকা নকশাবন্দ-মুজাদ্দেদি তরিকা নামে পরিচিত। খাজা এনায়েতপুরী ভোগবিলাসী জীবনযাপনের চরম বিরোধী ছিলেন। তিনি ইসলামের মর্মবাণী-তরিকত দর্শন প্রচারের পাশাপাশি সমাজসেবা মুলক কাজেও রেখেছিলেন অনন্য অবদান। খাজা এনায়েতপুরী কে ভক্তবৃন্দ সুলতানুল আউলিয়া এবং চিরস্থায়ী সংস্কারের জন্য আখেরী মুজাদ্দেদে বলে অভিহত করেন।

ব্যক্তিগত জীবন

খাজা ইউনুস আলীর জন্ম ১১ জ্বিলহজ্জ ১৩০৩ হিজরিতে (১০ সেপ্টেম্বর ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দ)। তিনি শিক্ষা এবং গবেষণা জন্য ১৭ থেকে ১৮ বছর বয়সে কলকাতার শেখ সৈয়দ ওয়াজেদ আলীকে অনুসরণ করেন।[] []

তাঁর পূর্বপুরুষগণ এসেছেন ইয়েমেন থেকে। তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের জন্যই তাদের আগমন ঘটে। খাজা এনায়েতপুরীর বাবা শাহ আব্দুল করিম ও মা তহমিনা বেগমের ২ ছেলে এবং ১ মেয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।

অবিভক্ত ভারতের অন্যতম ধর্ম প্রচারক তৎকালীন কলকাতার মেহেদীবাগ দরবার শরীফের পীর খাজা ওয়াজেদ আলী-র সংস্পর্শে আসেন খাজা ইউনুছ আলী। আদর্শিক কর্মকাণ্ড এবং মানুষের প্রতি অগাধ ভালবাসা ও নির্লোভ গুণের কারণে খুব স্বল্প সময়ে খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরী গুরু খাজা ওয়াজেদ আলীর তরিকা লাভ করেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি ইসলাম ও সুফীবাদের দর্শন ভারতের আসাম সহ সারা বাংলায় প্রচারে খেলাফত প্রাপ্ত হন। এরপর নিজ ভূমিতে ফিরে এসে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে খানকা স্থাপন করে শুরু করেন ইসলাম প্রচার এবং আদর্শের সুফী বাদের বিস্তার কাজ শুরু করেন। সেখানেই তিনি বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন। জনক হন ৮ কন্যা এবং ৫ পুত্র সন্তানের। পরবর্তীতে সমগ্র বাংলার পাশাপাশি ভারতের আসামে সফর করে তিনি ইসলাম ও সুফীবাদ প্রচার কাজ তরান্বিত করেন। তিনি ইসলামের মর্মবাণী-তরিকত দর্শন প্রচারের পাশাপাশি সমাজসেবা মুলক কাজেও অবদান রেখেছিলেন।

এরপর তার অনুসারীদের পরামর্শক্রমে এনায়েতপুর দরবারে ১৯১৫ সাল থেকে শুরু করেন ওরশ শরীফ। এতে সারা দেশ থেকেই তার ভক্ত মুরিদরা এখানে সমবেত হতে থাকেন যা ধীরে-ধীরে অগণিত ভক্তদের আগমনে মহাসমাবেশে রুপ নেয়। এরই একপর্যায়ে তার সংস্পর্শে এসে আদর্শিক আলোর পথ প্রচারে ১২শ পীর আওলিয়া নিয়োজিত হন।

এর মধ্যে ফরিদপুরের সদরপুরের প্রখ্যাত আটরশি পীর, চন্দ্রপাড়া পীর, ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ পীর, টাঙ্গাইল প্যারাডাইস পাড়া, কুমিল্লার ইসলামাবাদ, মাতুয়াইল, জামালপুরের সাধুরপাড়া মোসলেম নগর, যশোরের ঘুনী দরবার শরীফ, ভারতের আসামের মেহেদীবাগ গণি খলিফার দরবার শরীফ অন্যতম। তারা একইভাবে খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরী সুফীবাদের আদর্শ ও ইসলাম প্রচার করেন। বাংলা ১৩৫৪ সনে নিজ দরবারে বিনামুল্যে চিকিৎসার জন্য "খাজা দাতব্য চিকিৎসালয়" নামে একটি সেবা প্রতিষ্ঠান তিনি গড়ে তোলেন। বিনা পয়সায় সেবা দিয়ে যাওয়া আধুনিক চিকিৎসার এই প্রতিষ্ঠানটি দেশ-বিদেশ থেকে আগত লাখো জাকের ও এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে।[]

শিক্ষা

শিক্ষার উপর খাজা ইউনুস আলীর দৃষ্টি ছিলো অনেক বেশি। তিনি মনে করতেন শিক্ষা হলো জীবনের ঐশ্বরিক, আলোকসজ্জা এবং তার শত শত, হাজার হাজার অনুগামীদের তিনি এই উপদেশই দিত।[] খাজা ইউনুস আলির শিক্ষার প্রতি ছিল উন্নত একটি ত্রিপক্ষীয় শিক্ষণ পদ্ধতি "লেখা" "বক্তৃতা" এবং তার তরিকা দ্বারা প্রভাবিত করত। তিনি তার মুরিদদের চার সুফী আদেশ দিতেন কাদেরিয়া তরিকা, চিশতিয়া তরিকা, নকশবন্দি তরিকা এবং মুজাদ্দিদিয়া তরিকা[] বিশেষ করে তিনি প্রভাবিত করতেন নকশবন্দি তরিকা এবং মুজাদ্দিদিয়া তরিকার উপর।[] তিনি শরিয়তের আলো এবং গঞ্জে আশরার নামে দুটি বই লিখেছেন।

মৃত্যু ও খেলাফত দান

খাজা এনায়েতপুরী রোববার ১৮ ফাল্গুন ১৩৫৮ বঙ্গাব্দ তথা ২ মার্চ ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করলে তার প্রতিষ্ঠিত এনায়েতপুর পাক দরবার শরীফের গদ্দিনশীন পীর হিসেবে তার বড় ছেলে খাজা হাশেম উদ্দিন দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তার মৃত্যুর পর এ দায়িত্ব আরেক সন্তান খাজা মোজাম্মেল হকের উপর ন্যাস্ত করা হয়। পরে তিনি অসুস্থ্য হয়ে মৃত্যুবরণ করলে খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরীর আরেক ছেলে খাজা কামাল উদ্দিন নুহু মিয়া দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

কিংবদন্তি

খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয় এবং খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজের [] নামকরণ করা হয় খাজা ইউনুস আলির নাম অনুসারে। এই প্রতিষ্ঠান দুটি প্রতিষ্ঠিত করেন খাজা ইউনুস আলির জামাতা খাজা এম আমজাদ হোসেন। কথিত রয়েছে খাজা তার জীবদ্দশায় মেডিকেল কলেজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।[]

তথ্যসূত্র

  1. Dastagir, Golam (২০০৬)। The Biographical Encyclopaedia of Islamic Philosophy। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 79–80। 
  2. "Sufism Journal: Community: Sufism in Bangladesh"sufismjournal.org 
  3. "Life and Work"Khwaja Enayetpuri। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ 
  4. "শাহ সুফি খাজা ইউনুছ আলী (রহ)"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  5. Dastagir, Golam (জুন ২০০২)। "Some Aspects of Khwaja Enayetpuri's Sūfism" (পিডিএফ)। ২২ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ 
  6. "Khwaja Enayetpuri(r) and his Legacy"। ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ 
  7. Dastagir, Golam। "Islam & Multiculturalism in Bangladesh: A Reflection" (পিডিএফ)International Institute of Advanced Islamic Studies। ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ 
  8. "About Kyamc"Khwaja Yunus Ali Medical College। ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ 
  9. "Our Vision, Our Mission"Khwaja Yunus Ali Nursing College। ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ

AltStyle によって変換されたページ (->オリジナル) /