বিষয়বস্তুতে চলুন
উইকিপিডিয়া একটি মুক্ত বিশ্বকোষ

হাম হাম জলপ্রপাত

এটি এই পাতার বর্তমান সংস্করণ, যা KanikBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৮:৩১, ৪ জুলাই ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (ইংরেজি উইকিপিডিয়া ও উইকিউপাত্তের তথ্যের ভিত্তিতে বট কর্তৃক বিষয়শ্রেণী যোগ)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক।

KanikBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৮:৩১, ৪ জুলাই ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সংস্করণ (ইংরেজি উইকিপিডিয়া ও উইকিউপাত্তের তথ্যের ভিত্তিতে বট কর্তৃক বিষয়শ্রেণী যোগ)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
হাম হাম জলপ্রপাত
অক্টোবরে হাম হাম
মানচিত্র
অবস্থানকমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক
ধরন জলপ্রপাত
মোট উচ্চতা১৩৫ ফুট (আনুমানিক)

হাম হাম কিংবা হামহাম বা চিতা ঝর্ণা, বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত বা ঝর্ণা। জলপ্রপাতটি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের শেষাংশে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মার সাথে দুর্গম জঙ্গলে ঘোরা একদল পর্যটক আবিষ্কার করেন।[] [তথ্যসূত্র প্রয়োজন ] দুর্গম গভীর জঙ্গলে এই ঝরণাটি ১৩৫[] , মতান্তরে ১৪৭ কিংবা ১৭০ ফুট উঁচু[] [] , যেখানে বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু ঝরণা হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের উচ্চতা [১২ অক্টোবর ১৯৯৯-এর হিসাব অনুযায়ী] ১৬২ ফুট।[] তবে ঝরণার উচ্চতা বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠিত কিংবা পরীক্ষিত মত নেই।[ক] সবই পর্যটকদের অনুমান। তবে গবেষকরা মত প্রকাশ করেন যে, এর ব্যাপ্তি, মাধবকুণ্ডের ব্যাপ্তির প্রায় তিনগুণ বড়।[]

নামের উৎপত্তি

[সম্পাদনা ]

হামাম ঝরণায় এপর্যন্ত (নভেম্বর ২০১১) গবেষকদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযান পরিচালিত হয়নি। সাধারণ পর্যটকেরা ঝরণাটির নামকরণ সম্পর্কে তাই বিভিন্ন অভিমত দিয়ে থাকেন। কেউ কেউ ঝরণার সাথে গোসলের সম্পর্ক করে "হাম্মাম" (গোসলখানা) শব্দটি থেকে "হাম হাম" হয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন। কেউ কেউ মনে করেন, সিলেটি উপভাষায় "আ-ম আ-ম" বলে বোঝানো হয় পানির তীব্র শব্দ, আর ঝরণা যেহেতু সেরকমই শব্দ করে, তাই সেখান থেকেই শহুরে পর্যটকদের ভাষান্তরে তা "হাম হাম" হিসেবে প্রসিদ্ধি পায়।[] তবে স্থানীয়দের কাছে এটি "চিতা ঝর্ণা" হিসেবে পরিচিত, কেননা একসময় এজঙ্গলে নাকি চিতাবাঘ পাওয়া যেত।[]

বিবরণ

[সম্পাদনা ]
হাম হাম জলপ্রপাত হতে উৎসারিত পানির প্রবাহ

ঝরণার যৌবন হলো বর্ষাকাল। বর্ষাকালে প্রচন্ড ব্যাপ্তিতে জলধারা গড়িয়ে পড়ে। শীতে তা মিইয়ে মাত্র একটি ঝরণাধারায় এসে ঠেকে। ঝরণার ঝরে পড়া পানি জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ছড়া তৈরি করে বয়ে চলেছে। এরকমই বিভিন্ন ছোট-বড় ছড়া পেরিয়ে জঙ্গলের বন্ধুর পথ পেরিয়ে এই ঝরণার কাছে পৌঁছতে হয়। ঝরণাটির কাছে যাওয়ার জন্য এখনও (নভেম্বর ২০১১) সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ গৃহীত হয়নি, সাধারণত স্থানীয় অধিবাসীদের থেকে কাউকে গাইড বা পথপ্রদর্শক নির্ধারণ করে পর্যটকরা ঝরণা ভ্রমণ করেন। তাছাড়া ঝরণাকে ঘিরে তৈরি হয়নি কোনো সরকারি অবকাঠামোও। ঝরণায় যেতে হলে কুড়মা বন বিটের চম্পারায় চা বাগান হয়ে যেতে হয়। চম্পারায় চা-বাগান থেকে ঝরণার দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। পথে অত্যন্ত খাড়া মোকাম টিলা পাড়ি দিতে হয়[] এবং অনেক ঝিরিপথ ও ছড়ার কাদামাটি দিয়ে পথ চলতে হয়। ঝিরিপথে কদাচিৎ চোরাবালুও তৈরি হয়, কিন্তু সেসকল স্থানে পর্যটকদের জন্য কোনো নির্দেশিকা দেখা যায় না। এছাড়া গভীর জঙ্গলে বানর, সাপ, মশা এবং জোঁকের অত্যাচার সহ্য করে পথ চলতে হয়। বর্ষাকালে হাম হামে যাবার কিছু আগে পথে দেখা পাওয়া যায় আরেকটি অনুচ্চ ছোট ঝরণার। হাম হামের রয়েছে দুটো ধাপ, সর্বোচ্চ ধাপটি থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে মাঝখানের ধাপে, এবং সেখান থেকে আবার পানি পড়ছে নিচের অগভীর খাদে। ঝরণার নিকটবর্তি বাসিন্দারা আদিবাসী ত্রিপুরা[]

প্রকৃতি

[সম্পাদনা ]

হাম হাম যাবার পথ এবং হাম হাম সংলগ্ন রাজকান্দি বনাঞ্চলে রয়েছে সারি সারি কলাগাছ, জারুল, চিকরাশি কদম গাছ। এর ফাঁকে ফাঁকে উড়তে থাকে রং-বেরঙের প্রজাপতি। ডুমুর গাছের শাখা আর বেত বাগানে দেখা মিলবে অসংখ্য চশমাপরা হনুমানের। এছাড়াও রয়েছে ডলু, মুলি, মির্তিঙ্গা, কালি ইত্যাদি বিচিত্র নামের বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ।[]

পরিবেশ বিপর্যয়

[সম্পাদনা ]

পর্যটকরা অত্যন্ত দুর্গম পথ পাড়ি দেবার জন্য খাবার এবং প্লাস্টিকের পানীর বোতল সঙ্গে করে নিয়ে থাকেন এবং খাবারকে পানির স্পর্শ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রায়ই পলিথিন ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে পর্যটকরা প্রায়ই সেসব ব্যবহৃত জিনিস বহন করে আবার নিয়ে আসতে আগ্রহ দেখান না এবং যত্রতত্র ফেলে নোংরা করেন ঝরণার নিকট-অঞ্চল। যা ঝরণা এমনকি জঙ্গলের সৌন্দর্য্যহানির পাশাপাশি পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর। তাই পর্যটকদেরকে পঁচনশীল বর্জ্য পুতে ফেলা এবং অপচনশীল বর্জ্য সঙ্গে করে নিয়ে আসা কিংবা পুড়িয়ে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়।

পাদটীকা

[সম্পাদনা ]
  • ^ যদিও ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ৫ সেপ্টেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে ৫০ সদস্যের একটি দল সরেজমিনে হাম হাম জলপ্রপাতটি পরিদর্শন করেন[] , কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবরণ কিংবা পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।
  • আরও দেখুন

    [সম্পাদনা ]

    তথ্যসূত্র

    [সম্পাদনা ]
    1. রাজকান্দি অরণ্যের হামহাম জলপ্রপাত [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ ], ইসমাইল মাহমুদ, সাপ্তাহিক ২০০০, ঢাকা থেকে ২২ এপ্রিল ২০১১ তারিখে প্রকাশিত; পরিদর্শনের তারিখ: ২০ নভেম্বর ২০১১।
    2. ডাকছে হামহাম , কমলগঞ্জ প্রতিনিধি; দৈনিক মানবজমিন, ঢাকা থেকে ২৭ জুলাই ২০১১ তারিখে প্রকাশিত; পরিদর্শনের তারিখ: ১৯ নভেম্বর ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
    3. "হামহামকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করার আহ্বান"প্রথম আলো। ঢাকা। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১১। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ ]
    4. রাজকান্দি পেরিয়ে হামহামে, কাউসার মো: নূরুন্নবী; ভ্রমণ, দৈনিক সমকাল, ঢাকা থেকে ২০ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে প্রকাশিত; পরিদর্শনের তারিখ: ১৯ নভেম্বর ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
    5. গোপাল দত্ত বাবলু (২০০০)। "মাধবকুণ্ড"। কালী প্রসন্ন দাস, মোস্তফা সেলিম। বড়লেখা: অতীত ও বর্তমান (প্রিন্ট)|format= এর |url= প্রয়োজন (সাহায্য) (ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড। পৃষ্ঠা ১৪৬-১৫২। 
    6. সিলেটের ‘হাম-হাম’ জল প্রভাত ডাকছে ভ্রমণ প্রিয়াসিদের ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ আগস্ট ২০১৩ তারিখে, আইনুল হক ফয়সাল, বাংলার কণ্ঠ, অস্ট্রেলিয়ার সুরী হিল্‌স থেকে ১৮ নভেম্বর ২০১১ তারিখে প্রকাশিত; পরিদর্শনের তারিখ: ১৯ নভেম্বর ২০১১।
    7. পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত মৌলভীবাজারের হামহাম জলপ্রপাত এম শাহজাহান আহমদ, বিডি২৪লাইভ.কম, মিরপুর ঢাকা থেকে ৯ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে প্রকাশিত; পরিদর্শনের তারিখ: ১৯ নভেম্বর ২০১১।

    বহিঃসংযোগ

    [সম্পাদনা ]
    উইকিমিডিয়া কমন্সে হাম হাম জলপ্রপাত সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।

    AltStyle によって変換されたページ (->オリジナル) /