বিষয়বস্তুতে চলুন
উইকিপিডিয়া একটি মুক্ত বিশ্বকোষ

দিওয়ান-ই-আলম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার বর্তমান সংস্করণ, যা Sarwar Faruqee (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৫:২৩, ১৪ অক্টোবর ২০২২ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (→‎দিওয়ান-ই-আলম )। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক।

Sarwar Faruqee (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৫:২৩, ১৪ অক্টোবর ২০২২ তারিখে সম্পাদিত সংস্করণ (→‎দিওয়ান-ই-আলম )
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
দিওয়ান-ই-আলম

দিওয়ান-ই-আলম একটি উর্দু কাব্য। এটি বাংলাভাষী উর্দু কবি আবুল আযীজ মোহাম্মদ ইসমাইল আলী (ইসমাঈল আলম) লিখিত উর্দু কাব্য। এর প্রকাশকাল:১৩২৮ হিজরী মোতাবেক ১৯১০ ইংরেজী, কাইয়ুমী, ওয়াকিয়ী মহলল্লা, টিকাপুর, কানপুর, ভারত। ১০০ পৃষ্ঠার এ কাব্যে রয়েছে মর্সিয়া, শের, ক্বসিদা ও বিচ্ছেদ সংগীত।[] কাব্যে মহানবীর (স.) সীরাত ও নাত-ই-রাসুল দ্ধারা সমৃদ্ধ। দিওয়ান-ই-আলম তিনটি অংশে বিভক্ত। প্রথমাংশ একটি হামদ ও বাকীগুলো নাত-ই-রাসুল। দ্বিতীয়াংশ আহলে বাইত ও সাহাবায়ে কেরামের প্রসংসা, কছিদা (বিষাদ সংগীত) ও তৃতীয়াংশ গজল।[] দিওয়ান-ই-আলম কাব্যের স্বীকৃতি স্বরূপ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-এর তৎকালীন প্রিন্সিপাল উইলিয়াম হেমিল্টন হার্লি ইসমাঈল আলীকে 'বাংলার তুতা' উপাধি প্রদান করেন।[] । দিওয়ান-ই-আলম কাব্যে কবির চিন্তাধারা ফুটে উঠে।

ইতিহাস

[সম্পাদনা ]

ইসমাঈল আলম কলকাতা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-এ পড়াকালীন সময়ে উর্দু কাব্যের প্রতি আকৃষ্ট হন। এ সময় বাঙ্গালী মুসলমানের বিপুল অংশ উর্দু কবিতার প্রতি অনুরক্ত ছিলেন।[] কলকাতায় অধ্যয়নরত সময়কালে ইসমাঈল আলমকে মির্জা গালিব-এর কাব্যরীতি প্রবলভাবে আকৃষ্ট করে। ফলে ইসমাঈল আলমের কাব্যে গালিবের কাব্যরীতি লক্ষ্য করা যায়।

দিওয়ান-ই-আলম

[সম্পাদনা ]

দিওয়ান-ই-আলম কাব্যে তিনটি অংশ রয়েছে। প্রথমাংশে একটি হামদ্নাতসমূহ, দ্বিতীয়াংশে মানাকিব, ওলী ও 'আলিমগণের প্রশংসা, কাসীদা ও মর্সিয়া এবং তৃতীয়াংশে গযলসমূহ স্থান লাভ করেছে। দ্বিতীয়াংশে বড় বড় সাহাবা, হযরত আলীর মানকাবাত, হযরত হোসাইন ইবনে আলী (রা)-এর শাহাদাতের উপর লিখিত কাসীদা, হযরত আব্দুল কাদের জিলানী, হযরত মইনুদ্দিন চিশতী, বাবা ফরিদউদ্দিন গঞ্জেশকার, নিজামুদ্দিন আউলিয়া, হযরত শাহ জালাল (র), হযরত ফযলুর রহমান গাঞ্জ-এ-মুরাদাবাদী, শাহ আহমদ মিঞা, সৈয়দ ওয়ারেস 'আলী লখনৌবী এবং 'আবদুল ওহাব সিলেটীর প্রশংসা ছাড়াও ছেলে মৌলবী আযীযুল হক-এর অকাল মৃত্যুতে লিখিত মর্সিয়া রয়েছে। দিওয়ান-ই-আলম-এর অনুদিত কাব্য রূপ:

" এই পৃথিবী মহাসাগর বিপুলা ওই আকাশতল

ফুলে-ফলে এই যে রূপের অন্তবিহীন কোলাহল
নিপুণ যত তৃপ্তিদায়ক মনের মত আকাশযান
সবাই তোমার রহম পেয়ে ধন্য ওহে মেহেরবান!

"
" নিরালা রাতের ঘুমে যদি ওঠে ফুল

নিথর বুকের খোপ নাচতে ব্যাকুল
যতিহীন যুগ ধরে দেখে যাব মুখ
ভুলে যাব জীবনের অগণিত দুখ।

"
" আহা রে কেমন মোহ বিরহ কাতর

চোখের কোটর ফুঁড়ে বয় যে আতর
নবীর আশিক যাঁরা কালে-মহাকালে
সবাই কি পড়ে যায় প্রবোধের জালে!

"

[]

পুরস্কার

[সম্পাদনা ]

দিওয়ান-ই-আলম কাব্যের স্বীকৃতি স্বরূপ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-এর তৎকালীন প্রিন্সিপাল উইলিয়াম হেমিল্টন হার্লি ইসমাঈল আলমকে 'বাংলার তুতা' উপাধি প্রদান করেন।[] [] তাঁর কবিতায় কোন কৃত্রিমতা ছিল না। তিনি হাম্দ, না'ত, মানকাবাত, কাসীদা, মর্সিয়া রচনা করেছেন। এসবের ভাষা ছিল সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল।[]

প্রকাশনা ইতিহাস

[সম্পাদনা ]

১০০ পৃষ্ঠা সংবলিত মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাঈল আলম রচিত এ উর্দু কাব্যটি ১৩২৮ হিঃ/১৯১০ সালে কানপুরের কাইউমী প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়।[]

সাহিত্য সমালোচনা

[সম্পাদনা ]

দিওয়ান-ই-আলম কাব্যের উপর সমালোচনা করেন পাকিস্থানি গবেষক আব্দুল জলিল বিসমিল, উর্দু দৈনিক পাসবান-এ নিবন্ধ লিখেন।[] বিসমিল লিখেন, তাঁর কবিতা পাঠে মনে হয়, যেন তিনি উর্দু ভাষাভাষী কবি।[] আসাম প্রদেশের গবেষক আব্দুল জলিল রাগবি 'মাশায়েখে আসাম' গ্রন্থে স্বতন্ত্র অধ্যায়ে আলোচনা লিখেন।[]

দিওয়ান-ই-আলম বঙ্গানুবাদ

[সম্পাদনা ]

দিওয়ান-ই-আলম কাব্যের প্রথম বাংলা অনুবাদ করেন সরওয়ার ফারুকী। ২৯ এপ্রিল ২০১৮ থেকে দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকায় ধারাবাহিক ছাপা হয়। দিওয়ান-ই-আলম-এর অনুদিত রূপ:

" তোমার কেশের আশে নির্ঘুম রাত

পাড়ি দেই অজস্র বোধের সাগর
আচমকা পাই যতো আসমানী ঘ্রাণ
হে রাসুল সবটাই তোমার আতর।

হে নবী তোমার প্রেমে আলমের বুক
আঁধারে মাতম ধরে ভাসায়ে চিবুক!

"
" আহা রে কেমন মোহ বিরহ কাতর

চোখের কোটর ফুঁড়ে বয় যে আতর
নবীর আশিক যাঁরা কালে-মহাকালে
সবাই কি পড়ে যায় প্রবোধের জালে!

ভারতের বুকে বসে উহ আহ করি
মদিনার ফুল হয়ে মদিনায় ঝরি।
আলমের জোড়া চোখ দূর দূর ওড়ে
মাসুম নবীর মুখ যদি চোখে পড়ে!

"

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা ]
  1. দৈনিক সিলেটের ডাক,২৯ এপ্রিল,২০১৮
  2. সিলহেট মে উর্দু, আব্দুল জলিল বসমিল, প্রকাশক: আনজুমান-এ-তারাক্কি উর্দু, ১৯৮০-১৯৮১ করাচি, পাকিস্তান
  3. মাসিক মদিনা, ফেব্রুয়ারি ২০০৯
  4. বাংলাদেশে আরবী, ফার্সী ও উর্দুতে ইসলামী সাহিত্য চর্চা- ড মুহাম্মদ আবদুল বাকী
  5. স্মৃতির পাতায় জালালাবাদ, লেখক: শহিদ চৌধুরী, প্রকাশক: জালালাবাদ ফোরাম, জাপান, ১৯৯৪।
  6. সিলহেট মে উর্দু, আনজুমান-এ-তারাক্কি উর্দু, ১৯৮০-১৯৮১ করাচি
  7. মাশায়েখে আসাম, লেখক: আব্দুল জলিল রাগবি, প্রকাশক: নুরি ইসলামিক ফাউন্ডেশন, নওয়াগাও, আসাম, ভারত

AltStyle によって変換されたページ (->オリジナル) /